সকালের নাস্তা বাদ দিলে বাড়ে ডায়াবেটিস ঝুঁকি

ব্যস্ততা কিংবা ওজন কমানোর আশায় অনেকেই দিনের এক বা একাধিক বেলা খাবার এড়িয়ে চলেন। কারও ধারণা, এতে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে বা স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে—খাবার বাদ দেওয়া কি সত্যিই শরীরের জন্য ভালো, না কি ক্ষতিকর?
খাবার খাওয়ার পর শরীর মূল পুষ্টি উপাদান, বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট, ভেঙে গ্লুকোজে রূপান্তর করে। এই গ্লুকোজ রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ায়। তখন অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন হরমোন নিঃসৃত হয়ে রক্তের গ্লুকোজকে শরীরের কোষে প্রবেশ করায়, যা শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয় বা পরে সংরক্ষণ হয়।
কিন্তু খাবার, বিশেষ করে সকালের নাস্তা বাদ দিলে শরীরের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নাস্তা না খেয়ে লাঞ্চ করেন, তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে যায়। অর্থাৎ সকালে না খাওয়ার ফলে শরীর স্বাভাবিকভাবে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। ভবিষ্যতে এটি প্রিডায়াবেটিস বা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
২০২০ সালের আরেক গবেষণায় টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে একই ধরনের ফল পাওয়া গেছে। নাস্তা বাদ দিলে তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা আরও খারাপ অবস্থায় চলে যায়।
যদিও দুপুর বা রাতের খাবার না খাওয়াতেও রক্তে চিনির মাত্রা কিছুটা প্রভাবিত হয়, তবে সকালের খাবারের মতো তীব্র নয়। কারণ সকালে খাবার গ্রহণ শরীরের মেটাবলিজমকে সক্রিয় করে তোলে। ফলে নাস্তা বাদ দিলে সারা দিনের গ্লুকোজ প্রতিক্রিয়া হয়ে ওঠে অস্থির ও অনিয়ন্ত্রিত।
ওজন কমাতে ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ বা স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ সহায়ক হতে পারে, তবে পুরোপুরি খাবার বাদ দেওয়া নয়। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়মতো পরিমিত ও সুষম আহার গ্রহণ আরও জরুরি।
সর্বোপরি, সকালের নাস্তা না খাওয়ার অভ্যাস শরীরের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে।
সূত্র: জিও নিউজ