রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫

|২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৪৬, ১০ আগস্ট ২০২৫

দূর্বৃত্ত রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঁঠা’: টিউলিপ

দূর্বৃত্ত রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঁঠা’: টিউলিপ
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর নিজেকে ‘বলির পাঁঠা’ বলে দাবি করেছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য ও সাবেক ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ জানিয়েছেন, মামলাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন তিনি। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

৪২ বছর বয়সী লেবার পার্টির এই নেত্রী জানান, তিনি গত সপ্তাহে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে জানতে পারেন, ঢাকার পূর্বাচলে জমি বরাদ্দে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে তাকে এবং আরও ২০ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে ১১ আগস্ট। তবে এখনো পর্যন্ত তিনি কোনো আনুষ্ঠানিক সমন পাননি এবং অভিযোগপত্রও দেখেননি।

তার ভাষ্যে, ‘আমি যেন এক অদ্ভুত দুঃস্বপ্নের মাঝে আটকে আছি, যেখানে বিচার শুরু হতে যাচ্ছে, কিন্তু আমি জানি না আমার বিরুদ্ধে আসল অভিযোগ কী।’

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় প্রয়োজনে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার চালানো হতে পারে।

টিউলিপ সিদ্দিক আরও বলেন, গত বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টি নির্বাচনে জয়লাভের পর তিনি অর্থনৈতিক সচিব ও সিটি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। সে সময় তিনি তার কাজ উপভোগ করছিলেন। কিন্তু একই সময়ে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর নতুন সরকার ক্ষমতায় আসে। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আনা শুরু হয়।

তিনি দাবি করেন, প্রথমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তোলা হয়, যা তিনি ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রসে একটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার অভিযোগও তোলা হয়, যার ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন। এমনকি নিরাপত্তার কারণে অন্য মালিকানাধীন বাড়িতে থাকার বিষয়েও সমালোচিত হন তিনি, যদিও যুক্তরাজ্যের নীতিগত আচরণবিধি পর্যালোচনার স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস তার আর্থিক বিষয়াদি খতিয়ে দেখে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর থেকেই রাজনৈতিক শত্রুতা থেকে এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে বলে দাবি করে টিউলিপ বলেন, ‘এটি মুহাম্মদ ইউনূস এবং আমার খালা শেখ হাসিনার মধ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলাফল। আমি এর বলি হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা প্রকৃত অপরাধ করেছে, তাদের বিচার হওয়া উচিত। কিন্তু আমি তাদের মধ্যে নই। এই মামলায় আমি কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।’

যুক্তরাজ্যে এখনো টিউলিপ সিদ্দিক এমপি পদে বহাল রয়েছেন এবং লেবার সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মুখ। তার এই মামলা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নজর কাড়ছে এবং তা ব্রিটেন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কেও নতুন চাপ তৈরি করতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।

সম্পর্কিত বিষয়: