ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ৬ জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন, দগ্ধ স্ত্রী–ছেলের মৃত্যু
নরসিংদীতে পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত স্ত্রী–সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন রিনা বেগম (৩৮) এবং তাঁর ছেলে ফরহাদ (১৫)।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৯টা ও দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুজন চন্দ্র সরকার।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান জানান, রিনার শরীরের ৫৮ শতাংশ ও ফরহাদের ৪০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরা দুজনই মারা যান। তাঁদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় রিনার ছোট ছেলে তাওহিদ (৭) এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন; তাঁর শরীরের প্রায় ১৬ শতাংশ দগ্ধ। আর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছাড়া পেয়েছেন রিনার বড় ছেলে জিহাদ (২৪), বোন সালমা বেগম (৩৪) এবং ভাগ্নে আরাফাত (১৫)।
ঘটনার মূল অভিযুক্ত ফরিদ মিয়া (৪৪) পেশায় পিকআপ চালক ও নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিনের পারিবারিক কলহের জেরে গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) গভীর রাতে ফরিদ মিয়া শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রী–সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এরপর ঘরের বাইরে থেকে দরজা আটকে পালিয়ে যান। প্রতিবেশীরা চিৎকার শুনে ঘরের দরজা ভেঙে সবাইকে উদ্ধার করে।
পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় দগ্ধদের নরসিংদী সদর হাসপাতাল হয়ে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। ঘটনার পর নিহত রিনার মা হোসনা বেগম শুক্রবার রাতে ফরিদ মিয়াকে একমাত্র আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন। পরদিন শনিবার রাতে রায়পুরার বারৈচা এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার জানান, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। দুইজন মারা যাওয়ায় এটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে। একমাত্র আসামি ফরিদ মিয়া বর্তমানে কারাগারে আছেন।’



























