শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

|২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:০৮, ১০ জুলাই ২০২৫

ফের বন্যায় ডুবল ফেনী, সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজে

ফের বন্যায় ডুবল ফেনী, সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজে
ছবি: সংগৃহীত

ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ফের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলা। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধের ২১টি স্থানে ভাঙন দেখা দেওয়ায় প্রবল স্রোতে পানি ঢুকে জনপদ তলিয়ে যাচ্ছে। বসতবাড়ি, রাস্তা, ফসলি জমি সবকিছুই প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ১টা থেকে বানভাসিদের উদ্ধারে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারা স্পিডবোট নিয়ে দুর্গত এলাকায় পৌঁছানোর প্রস্তুতি নিয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়েছে।

ছাগলনাইয়ার দক্ষিণ সতর এলাকার বাসিন্দা রবিউল হাসান বলেন, ‘বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি এত তীব্র স্রোতে ঢুকছে যে সবকিছু তলিয়ে যাচ্ছে। গত বছরের মতো একই দুর্যোগ আবারও দেখতে হচ্ছে।’

অন্য এক বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ নেই, মোবাইল নেটওয়ার্কও দুর্বল। এখনও কোনো প্রশাসনিক সহায়তা পাইনি। প্রতিবছর একই ভোগান্তির পেছনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার অবহেলা রয়েছে।’

জেলার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে এবং শুক্রবারও হালকা বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, নদীর পানি এখন বিপৎসীমার প্রায় ২ মিটার নিচে থাকলেও বাঁধ ভাঙনের কারণে পানি ঢুকে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমে গেলে বাঁধ মেরামতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও সদর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। সেনাবাহিনী উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে। জেলার ছয় উপজেলায় ত্রাণ তৎপরতার জন্য সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

বারবার বন্যার কবলে পড়ে স্থানীয়দের ক্ষোভ বাড়ছে। কেউ কেউ বলছেন, সরকারের পরিবর্তন হলেও দুর্ভোগের চিত্র বদলায় না। এ অবস্থায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও সঠিক আগাম প্রস্তুতির দাবিও উঠেছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে।