রাজনীতিতে ‘সৌভাগ্যবান’ ববি হাজ্জাজ, অস্বস্তিতে বিএনপির আন্দোলনের শরিকরা
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)–এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ এখন রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। কারণ, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থেকেও তিনি দলের ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন ঢাকা–১৩ আসনে।
২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করা এনডিএম আগামী বছর নয় বছরে পদার্পণ করবে। ইতোমধ্যেই দলটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনপ্রাপ্ত ৪৩তম রাজনৈতিক দল, যার প্রতীক ‘সিংহ’।
১৫ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপি আয়োজিত পরিচিতি সভায় ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক ঘোষণা দেন—ববি হাজ্জাজ জোটের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে ঢাকা–১৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের এই প্রার্থীকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
ববি হাজ্জাজ নিজেও জানিয়েছেন, “ঢাকা–১৩ আসনে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা আমাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করেছেন। সবাই ঐক্যবদ্ধ। নির্বাচনে বিজয়ের বিষয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী।”
রাজধানী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৮ থেকে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই আসনটি (জাতীয় সংসদ আসন নম্বর ১৮৬) একসময় ঢাকা–৯ আসনের অংশ ছিল। এর আগে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এই আসনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
তবে বিএনপির বেশ কিছু হেভিওয়েট নেতা আব্দুস সালাম ও আতাউর রহমান ঢালীসহ দীর্ঘদিন ধরে এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তাঁদের বাদ দিয়ে নবীন দলের চেয়ারম্যানকে প্রার্থী করায় বিএনপির জোট শরিকদের মধ্যে অস্বস্তি ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
বেশ কয়েকজন শরিক দলীয় নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘ববি হাজ্জাজ রাজনীতিতে আমাদের চেয়ে অনেক জুনিয়র। তার দলও নবীন। আমরা দীর্ঘদিন বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে ছিলাম গ্রেপ্তার, মামলা, নির্যাতন সব সহ্য করেছি। অথচ এনডিএম এসেছে হাসিনা পতনের একেবারে শেষ দিকে। তাদের কখনো এমন পরীক্ষা দিতে হয়নি।’
তাঁদের মতে, ‘ববি হাজ্জাজ ‘বিতর্কিত’ মুসা বিন শমসেরের পুত্র এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শেখ সেলিমের জামাই। বিএনপি তাকে যেভাবে সম্মান দিল, তা দীর্ঘদিনের শরিকদের কখনও দেখায়নি।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্বাচন শুধু বিএনপির নয়, সবার জন্যই চ্যালেঞ্জ। হাইকমান্ডকে নানামুখী বিষয় বিবেচনা করতে হয়। তাই ববি হাজ্জাজকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে একটি কৌশলগত চিন্তার অংশ হিসেবে।’
বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন বিএনপির নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি। ববি হাজ্জাজের দল অনেক নবীন। যদি বিএনপি আমাদেরও কর্মসভা করে প্রার্থী ঘোষণা করত, তাহলে নেতাকর্মীদের উদ্দীপনা আরও বাড়ত।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা দ্য বলেন, ‘ববি হাজ্জাজকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির। আমরা শুভেচ্ছা জানাই। তবে আমাদের ক্ষেত্রেও দ্রুত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলে অস্বস্তি দূর হবে।’
এনডিএমের মহাসচিব মো. মমিনুল আমিন জানান, ‘মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে আমাদের চেয়ারম্যান পূর্ণ উদ্যোমে ঢাকা–১৩ আসনে কাজ শুরু করেছেন। আমিও রাজবাড়ী–২ আসনে জোট প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছি।’ সূত্র: দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস



























