‘লাঙল’ নিয়ে টানাটানি তিন জাপার

জাতীয় পার্টির (জাপা) ঐতিহ্যবাহী প্রতীক লাঙল নিয়ে ফের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন অংশ লাঙলের দাবি জানিয়ে বলেছে, সাম্প্রতিক কাউন্সিলে তারা নির্বাচিত হওয়ায় বৈধ নেতৃত্ব তাদের হাতেই রয়েছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম বলেন, ৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে তিনি চেয়ারম্যান এবং রুহুল আমিন হাওলাদার মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া হয়েছে। তাই জি এম কাদেরের আর চেয়ারম্যান থাকার বৈধতা নেই। তার দাবি, ‘প্রতীকের মালিক কোনো ব্যক্তি নয়, আইন ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বৈধ জাপাই লাঙলের দাবিদার।’
অন্যদিকে জি এম কাদেরপন্থীরা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, কাদেরই কাউন্সিলে নির্বাচিত বৈধ চেয়ারম্যান এবং পরবর্তী কাউন্সিল পর্যন্ত তার নেতৃত্ব বহাল থাকবে। অন্য কারও আহ্বানে কাউন্সিল বৈধ নয়। ফলে লাঙল প্রতীকও কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাপার কাছেই থাকবে।
গত বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন স্বীকার করেছিলেন, বর্তমানে জাতীয় পার্টি নামে ছয়টি দল সক্রিয় এবং তিনটি দল লাঙলের দাবিদার। ফলে বৈধ মালিকানা নির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
ইতিহাসে লাঙল নিয়ে আগে বহুবার দ্বন্দ্ব হয়েছে। ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সরকারে থাকা না থাকা প্রশ্নে জাপা ভাঙলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু লাঙলের দাবি তুলেছিলেন। তবে আদালতের রায়ে প্রতীকটি এরশাদের কাছেই থেকে যায়। ২০২৩ সালের উপনির্বাচন ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় রওশন এরশাদও লাঙলের দাবি করেছিলেন।
আনিসুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে জি এম কাদেরকে এক হাতে শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি করা, অন্য হাতে আবার আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন বৈধ হবে না— এমন দ্বৈত নীতি গ্রহণের অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাপা (আ-হা) জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ অন্যরা।