বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

|২২ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:০৪, ১৯ জুলাই ২০২৫

রাষ্ট্রীয় ব্যয়ে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’, কারফিউ কি ন্যায়সঙ্গত? প্রশ্ন মাসুদ কামালের 

রাষ্ট্রীয় ব্যয়ে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’, কারফিউ কি ন্যায়সঙ্গত? প্রশ্ন মাসুদ কামালের 

সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জে বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া কারফিউ শুক্রবার পর্যন্ত চলেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই মুহূর্তে সেখানে কারফিউর প্রয়োজনীয়তা কী? কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, একটি জেলাকে কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখতে হলো?’

তার মতে, প্রশাসনের ভাষ্যমতে, হয়তো যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল, তাদের গ্রেপ্তার করতেই এমন ব্যবস্থা। ‘তাহলে প্রশ্ন হলো, এখন পর্যন্ত কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? পত্রপত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, যাদের দায়ী করা হচ্ছে, তারা অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তাহলে কারা ভুক্তভোগী হচ্ছেন? স্থানীয়দের আশঙ্কা, কারফিউর সুযোগে নিরীহ মানুষদের হয়রানি করা হচ্ছে।’

মাসুদ কামাল আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে এমন একটা আতঙ্ক তৈরি করা হলো, যেন বঙ্গবন্ধুর সমাধি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু উসকানিমূলক প্রচারণা এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এমন আবেগপূর্ণ জায়গায় এর প্রতিক্রিয়া হবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এর দায় কে নেবে?’

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘সবচেয়ে বেদনাদায়ক বিষয় হচ্ছে পাঁচজন সাধারণ মানুষের মৃত্যু। যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। কেউ রিকশাচালক, কেউ দোকানদার তাদের জীবন কেড়ে নেয়ার দায় কে নেবে?’

এ ছাড়া, মার্চ টু গোপালগঞ্জ কর্মসূচিকে ‘ব্যর্থ প্রজেক্ট’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই কর্মসূচির নিরাপত্তায় যেভাবে সাঁজোয়া যান, এপিসি, বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল তা রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর সফরের সমান নিরাপত্তার চেয়েও বেশি ছিল। কেউ কেউ হিসাব করে বলছেন, এর খরচ প্রায় ৮ কোটি টাকা! তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে, একটি অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের এমন কর্মসূচির জন্য রাষ্ট্রের এত ব্যয় কেন?’

নাহিদ ইসলামের ঘোষণার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তিনি ঘোষণা দিয়েছেন আবার গোপালগঞ্জে যাবেন, ঘরে ঘরে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা’ ওড়াবেন। কিন্তু এসব উচ্চকিত ঘোষণা বাস্তবতা থেকে কতটা দূরে? আপনারা যদি হিংসা ছড়ান, বিভক্তি তৈরি করেন, সেটি কি গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে যায়?’

মাসুদ কামালের ভাষায়, ‘এই অযৌক্তিক ব্যয়, উত্তেজনা ও হতাহতের দায় কোনো পক্ষ এড়াতে পারে না। আমরা চাই না এভাবে সাধারণ মানুষের প্রাণ ও রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হোক। রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতা ও বাস্তবতা বিবেচনায় সবাইকে ভাবতে হবে।’ 

সম্পর্কিত বিষয়: