রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫

|২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:৩৩, ১০ জুলাই ২০২৫

চীনের ব্রহ্মপুত্র বাঁধ ‘বোমার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়’

চীনের ব্রহ্মপুত্র বাঁধ ‘বোমার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়’
ছবি: সংগৃহীত

চীন ব্রহ্মপুত্র নদের তিব্বতি অংশ ইয়ারলুং সাংপোতে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণ করছে। এই প্রকল্পকে ভয়াবহ বিপদের পূর্বাভাস হিসেবে দেখছেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু। পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, এই বাঁধ শুধু পরিবেশগত উদ্বেগই নয়, বরং অস্তিত্বের জন্যও হুমকিস্বরূপ।

খাণ্ডুর দাবি, চীন আন্তর্জাতিক পানিবণ্টন চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী নয়, তাই তারা কোনো বাধ্যবাধকতা মানবে কি না, তা অনিশ্চিত। তার কথায়, ‘সমস্যা হলো চীনকে বিশ্বাস করা যায় না। তারা কী করবে কেউ জানে না।’

মুখ্যমন্ত্রী জানান, সামরিক আগ্রাসনের চেয়েও এই বাঁধ প্রকল্প বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। একে তিনি ‘পানি বোমা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন, যা ইচ্ছেমতো পানি ছেড়ে দিয়ে সিয়াং উপত্যকায় ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে। এতে স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি, জমি ও জীবন-জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তিনি বলেন, চীন যদি আন্তর্জাতিক চুক্তির অংশ হতো, তাহলে এই বাঁধ আঞ্চলিক বন্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারত। কিন্তু এখন এটি বিপদের কারণ। ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে অরুণাচল সরকার নিজস্ব সুরক্ষা প্রকল্প নিয়েও ভাবছে, যা প্রতিরক্ষামূলক ও পানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে হবে।

খাণ্ডু আরও জানান, চীন প্রকল্পের কাজ অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছে, কিন্তু কোনও তথ্য শেয়ার করছে না। ভবিষ্যতে ব্রহ্মপুত্র ও সিয়াং নদী শুকিয়ে যাওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই ভারতকেও বিকল্প পরিকল্পনায় এগোতে হবে, যাতে পানির স্বকীয় চাহিদা পূরণ করা যায়।

এই প্রকল্পের ঘোষণা আসে ২০২১ সালে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সীমান্ত সফরের পর। চীন ২০২৪ সালে ১৩৭ বিলিয়ন ডলারের এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন দেয়, যা ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। প্রকল্পটি হিমালয়ের ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত, যা পরিবেশ ও নিরাপত্তা উভয় দিক থেকেই গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করছে।