দীর্ঘ লড়াই শেষে প্রাথমিকের ৪৫ প্রধান শিক্ষকের বেতন দশম গ্রেডে
দীর্ঘ সাত বছরের আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১১তম থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে তাঁরা গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদাও পেয়েছেন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সেবিকা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের রায়, ২০২৫ সালের ১৩ মার্চ আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায় এবং ২০২৫ সালের ৬ অক্টোবর অর্থ বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে রিট পিটিশনকারী ওই ৪৫ প্রধান শিক্ষকের বেতন উন্নীত করা হয়েছে। রায়ের তারিখ থেকে অর্থাৎ ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে তাঁরা দশম গ্রেডের আর্থিক সুবিধা পাবেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় বলা হয়, এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রধান শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম এবং অপ্রশিক্ষিতদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করেন।
পরে ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজের নেতৃত্বে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাঁদের পক্ষে রায় দিয়ে প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড ও গেজেটেড মর্যাদা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
সরকারের করা আপিল ও পরবর্তী রিভিউ শেষে চলতি বছরের ১৩ মার্চ আপিল বিভাগ রায় বহাল রাখে। আজ মন্ত্রণালয় সেই রায় বাস্তবায়ন করেছে।
এর আগে গত ২৮ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, দেশের ৬৫ হাজার ৫০২ প্রধান শিক্ষক পদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করার বিষয়ে সরকারের সম্মতি রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজ বলেন, ‘দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে প্রধান শিক্ষকদের প্রাণের দাবি বাস্তবায়ন করায় সরকারের সব পক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। এটি শুধু আমাদের নয়, প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থারও বিজয়।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তে প্রধান শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা, সামাজিক মর্যাদা ও কর্মপ্রেরণা বাড়বে, যা প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।



























