ঠাকুরগাঁওয়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ তিন ছাত্রী, ৪৮ দিনেও মেলেনি খোঁজ
ঠাকুরগাঁওয়ে তিন মাদরাসা ছাত্রীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ৪৮ দিন পেরিয়েও রহস্যের জট খুলতে পারেনি। নিখোঁজের দিন রাতেই তারা শহরের রোড এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে ওঠে, কিন্তু ভোরের আগেই হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ মেলেনি।
নিখোঁজ ছাত্রীরা হলেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মুরারিপূর গ্রামের জুঁই (১৪), গণকপয়েনর গ্রামের জান্নাতুল ফেরদৌস তামান্না (১৬) এবং ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আয়শা সিদ্দিকা (১৩)। তারা ঠাকুরগাঁওয়ের আয়শা সিদ্দিকা বালীকা মাদরাসার ছাত্রী।
মাদরাসা সূত্র জানায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় শেষবার মাদরাসায় দেখা যায় তিনজনকে। ভোর ৫টায় রুমে ডাকলেও তাদের আর পাওয়া যায়নি। মাদরাসার দোতলার বারান্দায় মশারি ঝুলতে দেখে ধারণা করা হয়, তারা নিজে পালিয়ে গেছে।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাত ১টার সময় তারা রিকশা করে বাসস্ট্যান্ডে যান। এরপর রেলস্টেশনে গিয়ে ট্রেন না পেয়ে রোড আবাসিক হোটেলে ভোর ৪টা পর্যন্ত থাকেন। পরে হোটেল থেকে রোড অটোস্ট্যান্ডে ফিরে পীরগঞ্জের উদ্দেশ্যে অটোরিকশায় রওনা হন। এরপর তাদের আর কোনো খোঁজ মেলেনি।
হোটেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান ইমন জানান, তিনজন রাতে হোটেলে কিছুক্ষণ থাকার পর বের হয়ে যান। হোটেলের রেজিস্ট্রার খাতায় অতিথির নাম ঠিকানা রাখা না হওয়ায় সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজদের পরিবার বলছেন, থানায় গিয়েও, প্রশাসনের দ্বার ঘুরেও কোনো সুরাহা মেলছে না। তামান্নার মা আখলিমা বেগম অভিযোগ করেন, মাদরাসায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না, বারান্দায় গ্রিলও নেই। আয়শার বোন বলেন, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের নিয়মিত নির্যাতন করতো, যা তাদের পালানোর কারণ হতে পারে।
মাদরাসার প্রধান শিক্ষিকা হামিদা বেগম বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছিল, তবে নির্যাতনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা জানান, নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর খোঁজ পাওয়ার জন্য প্রশাসন সবরকম উদ্যোগ নিয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে, দ্রুতই তারা পরিবারের কাছে ফিরবে।



























