তারেক রহমানের বক্তব্যে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা
দশ সাংগঠনিক বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষ করেছে বিএনপি। সোমবার রাতে ঢাকা বিভাগের মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রমের সমাপ্তি হয়। এ সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আবেগঘন বক্তব্যে উপস্থিত অনেকেই অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমার মাও মৃত্যুর মুখোমুখি ছিল। ইচ্ছে করলে আমি মাকে নিয়ে আসতে পারতাম। কিন্তু মা আপনাদের ছেড়ে আসেননি। ছয়বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও তিনি জনগণের পাশে থেকেছেন। যে মাকে আমি নিয়ে আসতে পারতাম, সেই মা-ই আপনাদের ছেড়ে আসেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমার মাকে তার ৪০ বছরের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। মা তার সন্তান হারিয়েছেন, সবকিছু হারিয়েছেন কিন্তু জনগণের স্বার্থে কোনো আপস করেননি। তার লক্ষ্য ছিল ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।’
আবেগঘন বক্তৃতার এক পর্যায়ে তিনি একটি আদালতের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘এক সন্তানকে নিয়ে দুই মায়ের দাবি ছিল। বিচারক বললেন, সন্তানকে দুই ভাগে ভাগ করা হবে। তখন আসল মা বললেন, না সন্তান ভাগ করার দরকার নেই, অন্য মাকে দিন, আমি দূর থেকে দেখব। বিএনপির প্রার্থীরাও যেন সেই আসল মায়ের ভূমিকা পালন করেন দল যাকে প্রার্থী করবে, তাকে সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করবেন।’
সভায় উপস্থিত মনোনয়নপ্রত্যাশীরা জানান, তারেক রহমানের বক্তব্যে সভাকক্ষে নীরবতা নেমে আসে, অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ‘তারেক রহমানের বক্তব্য ছিল হৃদয়স্পর্শী। আমরা সবাই তাকে আশ্বস্ত করেছি, নির্বাচনের আগে ও পরে ঐক্যবদ্ধ থাকব এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করব।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে দলের অনেক নেতাকর্মী ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। তবে দলের স্বার্থে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই সবাইকে কাজ করতে হবে।’
তিনি নেতাদের নির্দেশ দেন, মনোনয়ন পাওয়ার পর আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বা ফুল বিতরণ করা যাবে না এসব করলে দলের ঐক্য বিনষ্ট হবে।
সোমবারের বৈঠকে ঢাকা, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। এর আগে রোববার রংপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগের প্রার্থীদের সঙ্গে একইভাবে আলোচনা করেন।
রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম বলেন, ‘সভায় দেশ, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন যাকেই দেওয়া হোক, ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।’
বরিশাল-৫ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, ‘তারেক রহমান ঐক্য ধরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। যে প্রার্থীকে দল মনোনয়ন দেবে, সবাই তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।’



























