শিশু অপহরণের পর হত্যা: ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় মুক্তিপণের দাবিতে সহোদর দুই শিশুকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ৩ নারীসহ ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে রায়ে ৫ জনকে খালাস দেয়া হয়।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারিক হাকিম মো. ওসমান গণির আদালত এ রায় দেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মীর মোশারফ হোসেন টিটু।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— রামু উপজেলার গর্জনিয়া বড়বিল এলাকার আলমগীর হোসেন প্রকাশ বুলু, মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুর শুক্কুর, ও মো. শহীদুল্লাহ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— একই এলাকার আবদুল মজিদ বদাইয়া, ফাতেমা খাতুন, রাশেদা বেগম ও লায়লা বেগম।
হত্যার শিকার মো. হাসান ওরফে শাকিল (১১) ও মো. হোসেন ওরফে কাজল (৮) একই এলাকার মো. ফোরকানের ছেলে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মীর মোশারফ বলেন, ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি বিকালে রামু উপজেলা গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল এলাকার দোকান কর্মচারী মো. ফোরকানের দুই ছেলে হাসান শাকিল (১০) ও হোসেন কাজল (৮) নামে শিশুকে বাড়ির অদূরে খেলা অবস্থায় পাখির ছানা দেয়ার লোভ দেখিয়ে একইএলাকার আবদুর শুক্কুরের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমসহ একটি চক্র অপহরণ করে।
তিনি জানান, অপহরণের পর ওই দিন রাতে মুঠোফোনের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রটি। পরে অপহৃতদের সন্ধান না পেয়ে ওই শিশুদের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে গত ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার পরপরই দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার আসামিদের স্বীকারোক্তি মতে স্থানীয় একটি পাহাড়ের জঙ্গলে গুমের উদ্দেশে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ওই দুই শিশুর মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে।
টিটু আরও বলেন, ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন। এরপর আদালত গত ২০১৯ সালের ২০ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।’
রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, ৯ বছর ধরে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলে। এ সময় সাক্ষী-প্রমাণসহ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আসামিদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। মঙ্গলবার নির্ধারিত দিনে আদালত আইনের বিধি মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া তাদের বিভিন্ন অংকের অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, রায় ঘোষণাকালে প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অন্যরা পলাতক রয়েছেন। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মোকারমা সুলতানা পুতু নামে তরুণীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
সদ্য সংবাদ/এসএইচ



























