রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

|৩০ কার্তিক ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:১০, ২০ অক্টোবর ২০২৫

বর্ষা-মাহিরের প্রেমের বলি জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ

বর্ষা-মাহিরের প্রেমের বলি জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, প্রেমের টানাপোড়নেই খুন হয়েছেন জুবায়েদ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা ও তার প্রেমিক মাহির রহমানকে কেন্দ্র করেই ঘটেছে এই হত্যাকাণ্ড।

সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, 'প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্রী বর্ষা জানিয়েছেন, তার সঙ্গে মাহির রহমানের দীর্ঘ ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাহির বুরহান উদ্দিন কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বর্ষা ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। ছোটবেলা থেকেই তাদের পরিচয় ও সম্পর্ক।'

ওসি বলেন, 'কিছুদিন আগে বর্ষা ও মাহিরের সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়। এক পর্যায়ে বর্ষা মাহিরকে জানায় যে, সে জুবায়েদকে পছন্দ করে। যদিও জুবায়েদের সঙ্গে বর্ষার কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না এবং এমন কোনো যোগাযোগ বা বার্তারও প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু বর্ষার এমন কথায় ক্ষিপ্ত হয়ে মাহির তার এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জুবায়েদকে খুন করে বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা।'

তিনি আরও জানান, জুবায়েদের বন্ধু সৈকতের সঙ্গে তার পরিচয় হয় ফেসবুকে। এর বাইরে তাদের মধ্যে কোনো ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল না। ঘটনার পর সৈকতের মাধ্যমেই বর্ষা জুবায়েদের মৃত্যুর খবর পান।

ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, 'জিজ্ঞাসাবাদের সময় বর্ষার মধ্যে কোনো হতাশা বা ভয় দেখা যায়নি। তিনি পুরো সময় স্বাভাবিক ও চিন্তামুক্ত ছিলেন। এ ঘটনায় আরও বিস্তারিত তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য জানানো হবে।'

জানা গেছে, জুবায়েদ হোসাইন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একইসঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। প্রায় এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ১৫, নূরবক্স লেনের ‘রৌশান ভিলা’ ভবনে ছাত্রী বর্ষাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন।

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওই ভবনের তিনতলায় বর্ষার বাসায় খুন হন জুবায়েদ। নিচতলার সিঁড়ি থেকে তিনতলা পর্যন্ত রক্তের দাগ দেখা যায়। তিনতলার সিঁড়িতে তার দেহ উপুড় হয়ে পড়ে ছিল।

ঘটনার পর রাতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে ও তাতীবাজার মোড় অবরোধ করে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। একই রাতে রাত ১১টার দিকে পুলিশ বর্ষাকে তার আরমানিটোলার বাসা থেকে হেফাজতে নেয় এবং ময়নাতদন্তের জন্য জুবায়েদের মরদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পেছনে কারা সরাসরি জড়িত এবং কীভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে, তা উদঘাটনে তদন্ত চলছে।

সদ্য সংবাদ/এমটি

সর্বশেষ