শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

|২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৫২, ১০ জুলাই ২০২৫

বিদেশি মালিকরা মানতে নারাজ নতুন টেলিকম নীতি  

বিদেশি মালিকরা মানতে নারাজ নতুন টেলিকম নীতি  

নতুন টেলিকম নীতিমালার খসড়ায় বিদেশি মালিকানার সীমা নির্ধারণের প্রস্তাবে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে কার্যরত মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিদেশি মালিকরা। প্রস্তাবিত নীতিমালায় মোবাইল কোম্পানিতে বিদেশি মালিকানা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশে সীমিত রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে নরওয়ের টেলিনর, মালয়েশিয়ার আজিয়াটা ও দুবাইভিত্তিক ভিওন গ্রুপ।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মালিকানার ওপর সীমা চাপিয়ে দেওয়ার এমন উদ্যোগ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে ক্ষুণ্ন করবে এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ভাবমূর্তিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

দীর্ঘ দেড় দশক পর টেলিকম খাতের নীতিমালায় বড় ধরনের সংস্কার আনতে যাচ্ছে সরকার। এই খসড়ায় মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে বিদেশি মালিকানা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ এবং অন্যান্য টেলিকম খাতে সর্বোচ্চ ৫৫ শতাংশে সীমিত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এ নিয়েই দেখা দিয়েছে বিরোধ।

বর্তমানে গ্রামীণফোনের ৫৫.৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে টেলিনরের হাতে, বাকিটা দেশীয় বিনিয়োগকারীদের। রবির ৯০ শতাংশ মালিক আজিয়াটা গ্রুপ এবং ১০ শতাংশ পুঁজিবাজারে। বাংলালিংক পুরোপুরি মালিকানাধীন ভিওনের। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে রবিকে ছাড়তে হবে ৫ শতাংশ এবং বাংলালিংককে ১৫ শতাংশ শেয়ার।

রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, আরও ১০ শতাংশ শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা থাকলেও, বাজারের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বিবেচনায় না এনে কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব নয়।

এদিকে, আন্তর্জাতিক এসএমএস ব্যবসা অপারেটরদের কাছ থেকে সরিয়ে নেয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাও নিয়ন্ত্রক সংস্থার অযাচিত হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো।

বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটি বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করার নয়, বরং দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরির অংশ।

বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোন সংযোগ সংখ্যা ১৮ কোটি ৭৬ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে ১৮ কোটি ১০ লাখ গ্রাহক গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকের। ফলে টেলিকম খাতে নেওয়া যে কোনো নীতিগত পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ওপর। তাই খসড়া নীতিমালা নিয়ে আলোচনার দাবি এখন আরও জোরালো হচ্ছে।