রয়টার্সের সাক্ষাৎকারে হাসিনা:
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শেখ পরিবার নাও থাকতে পারে
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন এক রাজনৈতিক অচলাবস্থার ইঙ্গিত দিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা এই নির্বাচন বয়কট করবেন।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব জানান তিনি।
সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, 'বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারের নির্বাচনী বৈধতা থাকা উচিত। লক্ষ লক্ষ মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেন। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে তাঁরা ভোট দেবেন না।'
হাসিনা আরও জানান, তিনি দলের সমর্থকদের অন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন দিতে বলবেন না। তবে তাঁর আশা, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
গত বছর ৫ আগস্ট জনবিক্ষোভের মুখে হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর আগে আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সেই সরকার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে 'যুদ্ধাপরাধ' ও 'নিরাপত্তা ঝুঁকি'র অভিযোগ তুলে দলটির নিবন্ধন বাতিল করা হয়। মে মাসে নির্বাচন কমিশনও আওয়ামী লীগের স্বীকৃতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করে নেয়।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী মামলার বিষয়ে হাসিনা বলেন, 'রাজনৈতিক প্রতিশোধের অংশ হিসেবেই এসব মামলা করা হয়েছে। আমাকে আদালতে নিজের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি। অথচ, আগামী ১৩ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।'
বাংলাদেশে ফেরার প্রশ্নে হাসিনা স্পষ্ট করে বলেন, 'যত দিন দেশে বৈধ সরকার, সাংবিধানিক ব্যবস্থা ও আইনের শাসন থাকবে, তত দিন পর্যন্ত দেশে ফিরতে ভালোবাসব।”
আওয়ামী লীগে তাঁর নেতৃত্ব বাধ্যতামূলক নয় বলে জানিয়ে হাসিনার বলেন, 'এটা আমার বা আমার পরিবারের বিষয় নয়। কোনও এক ব্যক্তি বা দল বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে না।'
বর্তমানে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পদত্যাগের পর তিনি বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে এসে আশ্রয় নেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যেই তাঁর প্রত্যর্পণ চেয়ে ভারতের কাছে নোট ভারবাল পাঠিয়েছে। ভারত সেই অনুরোধের প্রাপ্তি স্বীকার করলেও, এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার ভোট বয়কটের আহ্বান বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বড়ো ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, আওয়ামী লীগ দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল, যার সমর্থন দেশের রাজনীতিতে এখনও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে।
সদ্য সংবাদ/এমটি



























