বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫

|২১ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২৭, ২৪ জুলাই ২০২৫

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেফতার

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেফতার
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে রাজধানীর ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল আটটার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

তিনি জানান, সকাল আটটার কিছু পরেই ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে আটক করা হয়েছে। তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং পরে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এ বি এম খায়রুল হক। ২০১১ সালের ১৭ মে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসরে যান।

সম্প্রতি তাকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি অভিযোগ করে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ধ্বংসে খায়রুল হক মূল ভূমিকা রেখেছেন এবং তাকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানায়।

খায়রুল হকের দেওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ রায় বিচারাঙ্গনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তিনি বিভিন্নভাবে সুবিধা পেয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে উপেক্ষা করে তাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ত্রাণ তহবিল থেকে চিকিৎসা খরচ নেওয়ার ঘটনায় সমালোচিত হন তিনি। অবসরের ঠিক আগে তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সংঘাতের দরজা খুলে দেয় এবং ক্ষমতাসীনদের একতরফা নির্বাচনের সুযোগ সৃষ্টি করে।

একটি রাজনৈতিক ইস্যু বিচারিক পর্যায়ে এনে খায়রুল হক রায়ে উল্লেখ করেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিতর্কিত বিচারপতিদের শপথ পড়ানো, আগাম জামিনের এখতিয়ার সীমিত করা, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে।

তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ইমরুল হাসান একটি মামলায় খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় জালিয়াতির অভিযোগ আনেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর, তিনি ১৩ আগস্ট পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে তিনি প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিলেন না।