বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

|২২ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮:০০, ২০ জুলাই ২০২৫

চীনের বিশাল বাঁধ, পানিযুদ্ধে কতটা ভোগান্তি পোহাবে বাংলাদেশ

চীনের বিশাল বাঁধ, পানিযুদ্ধে কতটা ভোগান্তি পোহাবে বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

তিব্বতের মালভূমিতে বিশাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। ইয়ারলুং সাংপো নদীর নিম্নপ্রবাহে নির্মিতব্য এই বাঁধ প্রকল্পটিকে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। শনিবার তিব্বতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ন্যিংচি শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

এই নদী তিব্বত পেরিয়ে ভারতের অরুণাচল ও আসাম রাজ্যে প্রবেশের পর ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত হয় এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়। ফলে প্রকল্পটি ঘিরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পানি সরবরাহ, পরিবেশ এবং নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার মতে, ২০২০ সালে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় এই বাঁধ নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রকল্পটি গত ডিসেম্বরে চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। আনুমানিক বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৩০০ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় থ্রি জর্জেস বাঁধের তিনগুণ।

চীনের দাবি, প্রকল্পটি প্রতিবেশী দেশগুলোর পরিবেশ, ভূতাত্ত্বিক স্থিতিশীলতা বা পানির অধিকারকে হুমকিতে ফেলবে না। বরং এটি দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমনে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকল্পটি নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, চীন এই বাঁধকে রাজনৈতিক চাপে পরিণত করতে পারে, যার ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে বন্যা বা খরার মতো দুর্যোগ ঘটানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়। এছাড়াও প্রকল্পটি জনবসতি উচ্ছেদ ও পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বাঁধ নির্মাণে চীনের এই পদক্ষেপের জবাবে ভারত ব্রহ্মপুত্র নদে নিজস্ব জলবিদ্যুৎ প্রকল্প দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে অরুণাচল প্রদেশে, যেটিকে ভারত নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করলেও চীন একে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে দাবি করে এবং সেখানে ভারতীয় অবকাঠামোর বিরোধিতা করে।

প্রকল্পে মোট পাঁচটি ক্যাসকেড জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকবে এবং এর মোট বিনিয়োগ ধরা হয়েছে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান বা ১৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই বিদ্যুৎ তিব্বতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও সরবরাহ করা হবে।

এছাড়া, এই প্রকল্প পরিচালনার জন্য ‘চায়না ইয়াজিয়াং গ্রুপ’ নামে একটি নতুন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়েছে, যা মালিকানা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ঝাং গোছিং বলেন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও পরিবেশ সংরক্ষার মাধ্যমে প্রকল্পটি নির্বিঘ্নে বাস্তবায়নের চেষ্টা চালানো হবে।