বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

|৭ কার্তিক ১৪৩২

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ৩ অক্টোবর ২০২৫

যেভাবে কমাবেন পেটের মেদ, ব্যায়াম নাকি সুষম খাদ্য!

যেভাবে কমাবেন পেটের মেদ, ব্যায়াম নাকি সুষম খাদ্য!
ছবি: সংগৃহীত

নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীরকে সক্রিয় রাখলে ক্যালোরি খরচ হয়, যা বিশেষভাবে পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং, সাঁতার বা যোগব্যায়ামের মাধ্যমে শুধু চর্বি কমানো হয় না, বরং বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়, মাংসপেশি শক্তিশালী হয় এবং হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে। পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে যায়।

পেটের চারপাশে চর্বি বেড়ে গেলে শুধু পোশাকের সুবিধা সীমিত হয় না, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। কম ঘুম ও মানসিক চাপের কারণে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, যার ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।

পেটের চর্বি কমানোর জন্য মনোযোগ দিতে হবে কয়েকটি বিষয়ে। ঘুমানোর আগে অন্তত দুই-তিন ঘণ্টা কিছু খাওয়া উচিত নয়। দিনের খাবারের ক্যালোরি দিনে ব্যবহার হয়ে যায়, রাতে তা চর্বি হিসেবে জমে যায়।

সুষম খাদ্য গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার পাকস্থলীতে দীর্ঘ সময় থাকে, ক্ষুধা কমায় এবং বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমায়। প্রোটিনও পেট ভরা রাখে, ক্ষুধা হ্রাস করে এবং মাংসপেশি শক্তিশালী করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম, ডাল, দুধ, পনির, দই, মাছ, মুরগি ও সয়া জাতীয় প্রোটিন রাখা উচিত।

পেটের অতিরিক্ত চর্বি উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে অতিরিক্ত শর্করা ও কোলেস্টেরল, টাইপ-টু ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, বেলি ফ্যাট ‘সাইটোকাইন’ ও ‘অ্যাঞ্জিওটেনসিন’ প্রোটিনের উৎপাদন বাড়ায়, যা প্রদাহ সৃষ্টি করে, রক্তনালী সংকুচিত করে এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। এর ফলে ডিমেনশিয়া, হাঁপানি এবং বড় ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।

ফোর্টিস এসকর্টস হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ডা. শিব কুমার চৌধুরী বলেন, পেটে জমে থাকা চর্বি অন্যান্য চর্বির চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক। চর্বির কোষ ভাঙলে বের হওয়া বিষাক্ত উপাদান হৃদপিণ্ডের ধমনীতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ বাড়িয়ে দেয়।

পেটের চর্বি বাড়ার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে—জেনেটিক বৈশিষ্ট্য, হরমোনজনিত পরিবর্তন, বয়স, অতিরিক্ত ওজন, মেনোপজ, অনিয়মিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মাধ্যমে পেটের চর্বি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন সাদা পাউরুটি, চিপস, ক্র্যাকার্স এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলো দ্রুত হজম হয়, রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বৃদ্ধি করে, ক্ষুধা বাড়ায় এবং ওজন বাড়ায়। হোল গ্রেইন পাউরুটি, ওভেনে বা শুকনো তাপে বানানো নাস্তা, ফল ও বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যকর। চিনি ও অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ সীমিত করতে হবে, কম অ্যালকোহল গ্রহণ করতে হবে এবং ধূমপান বন্ধ করতে হবে।

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ