গ্রেটা থুনবার্গকে ইসরায়েলি পতাকা চুম্বন করতে বাধ্য করার অভিযোগ
গাজায় ত্রাণবাহী নৌবহর 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা'-তে যোগ দেয়া আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলনের নেতা গ্রেটা থুনবার্গকে ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজামুখী ত্রাণবহরটির নেতৃত্বে থাকা থুনবার্গসহ বহু আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবককে আটক করে ইসরায়েলি বাহিনী। পরে আটক ১৩৭ জনকে তুরস্কে পাঠানো হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৬ জন তুর্কি নাগরিকও আছেন বলে তুর্কি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
তুর্কি সাংবাদিক ও ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারী এরসিন সেলিক স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, 'আটক অবস্থায় গ্রেটা থুনবার্গকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি নিজ চোখে দেখেছি, কীভাবে থুনবার্গকে মাটিতে টেনেহিচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং ইসরায়েলি পতাকা চুম্বন করতে বাধ্য করা হয়েছে।'
একই ধরনের বর্ণনা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার কর্মী হাজওয়ানি হেলমি ও মার্কিন অংশগ্রহণকারী উইন্ডফিল্ড বিভার। তারা জানান, থুনবার্গকে ধাক্কা দিয়ে ইসরায়েলি পতাকা হাতে প্যারেড করানো হয়। হাজওয়ানি হেলমির অভিযোগ, আটক ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়নি।
ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো আগোস্তিনো আনাদোলু সংবাদ সংস্থাকে বলেন,'“গ্রেটা থুনবার্গ মাত্র ২২ বছরের এক সাহসী তরুণী। তাকে অপমান করা হয়েছে, ইসরায়েলি পতাকায় মুড়িয়ে যেন ট্রফির মতো প্রদর্শন করা হয়েছে।'
মার্কিন নাগরিক উইন্ডফিল্ড বিভারের দাবি, থুনবার্গের সঙ্গে ভয়ঙ্কর আচরণ করা হয়েছে এবং সেই ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ হিসেবে ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। তিনি আরও জানান, অতি-ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইটামার বেন-গভির সেখানে প্রবেশের সময় থুনবার্গকে একটি ঘরে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়।
তুর্কি টেলিভিশন উপস্থাপক ইকবাল গুরপিনার বলেন, 'তারা আমাদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করেছে। তিন দিন ধরে ক্ষুধার্ত রেখেছিল, পানি দেয়নি। শেষ পর্যন্ত টয়লেটের পানি পান করতে হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে আমরা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।'
গুরপিনার বলেন, এই অভিজ্ঞতা তাকে গাজার মানুষের দুর্ভোগ আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছে।
এর আগে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৪০টি নৌকা ও ৪৫০ জনকে আটক করে ইসরায়েল। বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে পড়ে তেল আবিব জানিয়েছে, অবশিষ্ট আটক ব্যক্তিদেরও শিগগির ইউরোপে পাঠানো হবে।



























