বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

|১৫ আশ্বিন ১৪৩২

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ১ অক্টোবর ২০২৫

অস্পষ্ট প্রেসক্রিপশন আর না, ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ ভারতের আদালতের

অস্পষ্ট প্রেসক্রিপশন আর না, ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ ভারতের আদালতের
ছবি: সংগৃহীত

ডাক্তারদের অস্পষ্ট হাতের লেখা নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে ভারতের আদালত। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট জানিয়েছে, চিকিৎসায় পড়তে সুবিধাজনক প্রেসক্রিপশন রোগীর মৌলিক অধিকার। কারণ অস্পষ্ট লেখা জীবন-মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

মূল ঘটনার সূত্রপাত একটি ধর্ষণ ও প্রতারণা মামলার শুনানি থেকে। বিচারপতি জশগুরপ্রীত সিংহ পুরি লক্ষ্য করেন, সরকারি চিকিৎসকের তৈরি করা মেডিকো-লিগ্যাল রিপোর্ট এতটাই অস্পষ্ট যে তা পড়া প্রায় অসম্ভব। বিচারক জশগুরপ্রীত সিংহ বলেন, প্রযুক্তি সহজলভ্য থাকা সত্ত্বেও এখনও অনেক ডাক্তার এমনভাবে প্রেসক্রিপশন লিখে থাকেন, যা কেবল অভিজ্ঞ ফার্মাসিস্ট ছাড়া কেউ পড়তে পারে না।

আদালত জানিয়েছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে সব চিকিৎসককে ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন চালু করতে হবে। ততদিন পর্যন্ত ডাক্তারদের স্পষ্ট করে বড় হাতের অক্ষরে প্রেসক্রিপশন লিখতে হবে। একইসঙ্গে মেডিকেল শিক্ষাক্রমে হাতের লেখা বিষয়ে আলাদা প্রশিক্ষণ যুক্ত করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ভারতের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ডা. দিলীপ ভানুশালী বলেন, 'বড় শহরে অনেক ডাক্তার ইতোমধ্যেই ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন ব্যবহার করছেন। তবে গ্রামীণ ও ছোট শহরে এখনো অস্পষ্ট হাতের লেখা ব্যাপক। দিনে সাতজন রোগী দেখলে স্পষ্ট লেখা সম্ভব, কিন্তু ৭০ জন রোগী দেখলে তা কঠিন।'

প্রেসক্রিপশন নিয়ে এই সমস্যা নতুন নয়। এর আগে ওড়িশা ও এলাহাবাদ হাইকোর্টও অস্পষ্ট হাতের লেখা নিয়ে সতর্ক করেছিলেন। আন্তর্জাতিক গবেষণায়ও দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর অন্তত ৭ হাজার মানুষ ডাক্তারদের হাতের লেখা না বোঝার কারণে ভুল চিকিৎসায় মারা যান।

ভারতেও অসংখ্য রোগী ভুল ওষুধ খেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন কিংবা মৃত্যুর মুখে পড়েছেন। যদিও ২০১৬ সালে মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া প্রেসক্রিপশনে বড় হাতের অক্ষরে ওষুধের জেনেরিক নাম লেখাকে বাধ্যতামূলক করেছে, কিন্তু বাস্তবে গ্রামীণ অঞ্চলে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না।

ফার্মাসিস্টরা বলছেন, অভিজ্ঞতা থাকলেও অনেক সময় ডাক্তারকে ফোন করে নিশ্চিত হতে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন কার্যকরভাবে চালু হলে শুধু ভুল ওষুধ দেওয়ার ঝুঁকিই কমবে না, বরং রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের জন্য কাজ সহজ হয়ে যাবে।

সর্বশেষ