বাংলাদেশে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা দিতে একসঙ্গে কাজ করবে উইকেয়ার ও থনবুরি হাসপাতাল
বাংলাদেশের রোগীদের জন্য সহজলভ্য ও বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করবে উই কেয়ার এবং থনবুরি বামরুংমুয়াং হাসপাতাল। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) আয়োজিত স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক এক সেমিনারে এ কথা জানানো হয়।
রাজধানীর লেকশোর হাইটস হোটেলে ‘উইকেয়ার উপস্থাপনায়, বাংলাদেশের জন্য থনবুরি বামরুংমুয়াং হাসপাতালের সেবার দৃষ্টিভঙ্গি’ শিরোনামে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উইকেয়ার তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে, যার মাধ্যমে একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর স্বাস্থ্যভ্রমণ ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশের রোগীরা আরও সহজে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন।
থনবুরি বামরুংমুয়াং হাসপাতালও বাংলাদেশের জন্য তাদের সেবার দৃষ্টিভঙ্গি, আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা ও মানবিক যত্নের অঙ্গীকার তুলে ধরে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই উইকেয়ার ও থনবুরি বামরুংমুয়াং হাসপাতালের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবায় সহযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উইকেয়ারের চেয়ারম্যান ফাতেমা তুজ জোহরা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ইমন।
থনবুরি বামরুংমুয়াং হাসপাতালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. পিতাকপল বুনইয়ামালিক, বিপণন ও ব্যবসা উন্নয়ন পরিচালক কার্নরাওয়ি বাওনথানাতাত, সিনিয়র হাড়–বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. প্রাচ কামলাংসিনসার্ম, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. তান সুওয়াতনাভিরোজ এবং আন্তর্জাতিক বিপণন সমন্বয়কারী (বাংলাদেশ) মালবিকা রহমান।
থনবুরি বামরুংমুয়াং হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. পিতাকপল বুনইয়ামালিক বলেন,‘থাইল্যান্ড বহুদিন ধরেই বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ চিকিৎসা পর্যটন গন্তব্য হিসেবে স্বীকৃত। উচ্চমানের চিকিৎসাসেবা, আধুনিক প্রযুক্তি এবং বিশ্ববিখ্যাত আতিথেয়তার জন্য সারা পৃথিবীতে এটি এক বিশ্বাসযোগ্য নাম।’
তিনি বলেন, ‘থনবুরি বামরুংমুয়াং হাসপাতাল গর্বের সঙ্গে থাইল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সারিতে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে রয়েছে চিকিৎসা উৎকর্ষ, আধুনিক উদ্ভাবন এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিক যত্নের এক অসাধারণ সমন্বয়। আমাদের হাসপাতাল তুলনামূলকভাবে নতুন এবং এটি পরিচালনা করছেন একদল তরুণ, অভিজ্ঞ ব্যবস্থাপনা দল যারা রোগীকেন্দ্রিক সেবা, স্বচ্ছতা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে কেন্দ্র করে এক নতুন প্রজন্মের চিকিৎসা নেতৃত্ব গড়ে তুলছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বৈশ্বিক মানদণ্ডের চিকিৎসাসেবা প্রদানে অঙ্গীকারবদ্ধ যেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, উন্নতমানের অবকাঠামো এবং সহানুভূতিশীল নার্সিং দল একসঙ্গে কাজ করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসংস্থা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা ঢাকা ও ব্যাংককের মধ্যে এক সেতুবন্ধন তৈরি করতে চাই যাতে বাংলাদেশের রোগীরা সহজেই আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বে ভরপুর, বিশ্বমানের থাই স্বাস্থ্যসেবার নির্ভরযোগ্য সুযোগ পেতে পারেন।’
অনুষ্ঠানে থনবুরি বামরুংমুয়াং হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়া কয়েকজন রোগী তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। যারা সরাসরি উপস্থিত হতে পারেননি, তাঁদের বক্তব্য ভিডিওর মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়। বক্তারা তুলে ধরেন, কীভাবে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন স্বাস্থ্যসেবায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে এবং বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের জন্য প্রক্রিয়াটি আরও সহজ করছে।
সেমিনারে অতিথিদের জন্য আয়োজন করা হয় লটারির মাধ্যমে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান, যেখানে নির্বাচিত অতিথিরা পেয়ে যান থনবুরি বামরুংমুয়াং হাসপাতালের বিশেষ স্বাস্থ্যপ্যাকেজ। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল পূর্ণ স্বাস্থ্যপরীক্ষা প্যাকেজ, ফুসফুসের জন্য সিটি লো-ডোজ পরীক্ষা এবং হৃদ্পিণ্ডের ক্যালসিয়াম স্কোর পরীক্ষা।
অনুষ্ঠানটি শেষ হয় মতবিনিময় পর্বের মাধ্যমে, যেখানে স্বাস্থ্যখাতের পেশাজীবী, অংশীদার প্রতিষ্ঠান ও অতিথিদের মধ্যে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
অনুষ্ঠানে উই কেয়ার ঘোষণা করে যে ভবিষ্যতে তারা আরও আন্তর্জাতিক হাসপাতালের সঙ্গে সহযোগিতা গড়ে তুলবে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে নিজস্ব ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা অ্যাপ চালু করবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের রোগীরা বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াটি একটি প্ল্যাটফর্মে সম্পন্ন করতে পারবেন। উই কেয়ার বিশ্বাস করে, এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।



























