ভিসা যেন সোনার হরিণ, বাংলাদেশিদের বিদেশযাত্রায় বাড়ছে জটিলতা

বিদেশে ভ্রমণ, পড়াশোনা বা পেশাগত কাজে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা পাওয়া দিনকে দিন কঠিন হয়ে উঠছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপ-আমেরিকা—সব অঞ্চলের দূতাবাসগুলোতে জমা পড়া ভিসার অধিকাংশ আবেদন এখন প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। ভিসা পাওয়া গেলেও মিলছে অনেক দেরিতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, বেআইনি অভিবাসনের হার এবং ভুয়া সনদপত্র-ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দেওয়ার প্রবণতাই এই সংকটের মূল কারণ।
ভ্রমণকারী নাদির নিবরাস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার বৈধ ভিসা থাকার পরও আমার তাজিকিস্তান ও বাহরাইনের মতো দেশের ই-ভিসা আবেদনও প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।’ একইভাবে ইউরোপ-আমেরিকার ভিসা থাকা সত্ত্বেও থাই দূতাবাস থেকে ভিসা পাননি পর্যটক কণা করিম।
চীনগামী এক ব্যবসায়ী জানান, ‘তিন বছরে ছয়বার চীন সফর করেছি। এবার জরুরি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আবেদন করেও ভিসা পাইনি।’
বিশ্বব্যাপী ভিসা প্রসেসিংয়ের অন্যতম সংস্থা (ভিএসএফ) গ্লোবাল জানায়, বাংলাদেশের কিছু আবেদনকারীর পক্ষ থেকে ভুয়া তথ্য ও জাল নথি জমা পড়ায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলো আরও কঠোর হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘জাল কাগজপত্র জমার প্রবণতা রোধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।’
আগে যেখানে অন-অ্যারাইভাল বা ই-ভিসা সুবিধা ছিল, সেখানে এখন অনেক দেশে অপেক্ষার সময় এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত। ভারতের ভিসা ব্যবস্থাও গত বছরের আগস্ট থেকে কার্যত বন্ধ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভিসা নীতিতে এই কড়াকড়ি অব্যাহত থাকলে বিদেশভ্রমণ, উচ্চশিক্ষা ও বৈধ কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাগুলো সংকুচিত হতে পারে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য।