বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও দিতে পারবে বৃত্তি পরীক্ষা: হাইকোর্ট
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালার আলোকে পরীক্ষার আয়োজন করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) শুধু সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি রেজাউল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চএ রায় দেন।
গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এক স্মারকলিপিতে জানায়, কেবল সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। ওই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কেরানীগঞ্জ পাবলিক ল্যাবরেটরি স্কুলের পরিচালক মো. ফারুক হোসেন, শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিসহ ৪২ জন চলতি বছর রিট আবেদন করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করে স্মারকে উল্লেখ করা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। রুলে জানতে চাওয়া হয়, শুধু সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরই বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি সংক্রান্ত ওই স্মারক কেন আইনবহির্ভূত বলে ঘোষণা করা হবে না এবং ২০০৮ সালের নীতিমালা অনুযায়ী বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নিয়াজ মোর্শেদ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ ইজাজ কবির। চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন।
২০০৫ সালে বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারত, যা ২০০৮ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নতুন নীতিমালার আওতায় পিএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানকার মেধাবীরা বৃত্তি পেত। করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে পরীক্ষা বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে আবার বৃত্তি পরীক্ষা চালু হয় প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার (সংশোধিত ২০১৬) নীতিমালায়। তবে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তা বন্ধ ছিল।
চলতি বছর সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশে এবার বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও অংশ নিতে পারবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ আগামী ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর।
সদ্য সংবাদ/এমটি



























