৪ বছরেও শেষ হয়নি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রকল্পের কাজ
প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক পার হলেও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) এখনো সম্পন্ন হয়নি শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র ‘টিএসসি ভবন’-এর নির্মাণকাজ। প্রায় ৩৪ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ ভবনের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। কিন্তু চার বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পটি এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি।
নানা জটিলতা ও ধীরগতির কারণে প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফায় বাড়ানো হলেও এখনো ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে আরও এক দফা মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক চর্চা, ক্লাব কার্যক্রম, বিতর্ক, নাটক ও সাহিত্যচর্চার কেন্দ্র হিসেবে টিএসসি ভবনের নির্মাণকাজ শুরুর সময় বলা হয়েছিল, দুই বছরের মধ্যে এটি সম্পন্ন হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ভবনের অডিটোরিয়াম, সাংস্কৃতিক মঞ্চ, ডিবেট কর্নার, ক্লাব অফিস, স্টুডেন্ট লাউঞ্জ ও ক্যাফেটেরিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাগুলো এখনো চালু হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান এখনো ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে সীমিত পরিসরে আয়োজন করতে হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের (২০২২-২৩) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হুদা ফাইয়াজ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় ২০ বছর পেরিয়ে গেল, কিন্তু এখনো আমরা টিএসসি পাইনি—এটা সত্যিই হতাশাজনক। টিএসসি না থাকা মানে সৃজনশীলতা ও মুক্তচিন্তাকে সংকুচিত করা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ক্লাবের সভাপতি মো. খালিদ আহমেদ সাইফুল্লাহ সাদ বলেন, ‘টিএসসি যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শুধুমাত্র ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর জন্যই নয়, সচেতন শিক্ষার্থীদের জন্যও এটি অপরিহার্য। কিন্তু শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ের মতো এখানেও পূর্ববর্তী প্রশাসনের উদাসীনতা দেখা গেছে। বর্তমান প্রশাসন যেহেতু শিক্ষার্থীবান্ধব অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাই আশা করি, সংগঠনগুলোর কার্যক্রম আরও বেগবান করতে এ ক্ষেত্রেও তারা দৃষ্টি দেবেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সৈয়দ মোফাছিরুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকবার ডিজাইন পরিবর্তন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে কাজ ধীরগতিতে চলছে। সামনে সময় বাড়ানো হবে, এবং আমরা আশা করছি আগামী বছরের জুন–জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।’
অন্যদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. সারোয়ার বলেন, ‘চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।’
শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা, দ্রুত টিএসসি ভবনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র চালু করা হবে।
সদ্য সংবাদ/ মো. শাহিদুল ইসলাম সবুজ



























