জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী: অধ্যাপক সুলতানা আক্তার
জাকসু নির্বাচনে ফয়জুন্নেসা হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সুলতানা আক্তার ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনার সিদ্ধান্তকে দায়ী করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং সহকর্মী জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে সিনেট ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যদি কাগজভিত্তিক গণনা না করে আগেই কাউন্ট করে রেজাল্ট দেওয়া যেত, তাহলে তার সহকর্মীর এই মর্মান্তিক ঘটনার সম্মুখীন হতে হতো না। নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনায় তাঁর সহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে—এই মৃত্যুর বিচারের দাবি জানান তিনি এবং প্রশাসনকে দায়ী করেন। পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও অনুরোধ করেন তিনি।
অধ্যাপক সুলতানা আক্তার আরও বলেন, চারুকলার আরেক রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী মহসিন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন; তার অনুপস্থিতিতে ভোট কাউন্ট কীভাবে সম্পন্ন হবে, তা নিয়েই তাদের উদ্বেগ। তিনি প্রশ্ন তোলেন কেন ম্যানুয়াল পদ্ধতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো এবং ম্যানুয়াল হলেও হলে ভোট কাউন্ট করা হয়নি। তার ব্যাখ্যা হলে কাউন্ট হয়ে থাকলে রাতেই অনেক স্থানে রেজাল্ট পাওয়া যেত, পরে নির্বাচন কমিশনে এনে এগারোটা নাগাদ চূড়ান্ত করা যেত।
সহকর্মীর অমানবিক পরিশ্রমকে কেন্দ্র করে তিনি বলেন, ওই সহকর্মীর জায়গায় তিনি নিজেও থাকতে পারতেন। দশ তারিখ থেকে সকাল সাতটা থেকে তারা প্রতিটি হলে উপস্থিত থেকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন; অনিয়ম রুখতেই তারা পরিশ্রম করেছেন।
তিনি জানান, প্রথমে বলা হয়েছিল ভোট মেশিনে গণনা হবে, শুধু কাস্টিং করে সিনেটে জমা দেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা এমন কথাই তাদের জানানো হয়েছিল এবং সেটিই মেনে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে হঠাৎ ম্যানুয়াল গণনায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। ভোট গণনার জন্য ফোন করে ডেকে আনা হয়েছিল জান্নাতুলকে; তিনি হয়তো উৎকণ্ঠায় ঠিক ঘুমাতে পারেননি; তাড়াহুড়ো করে এসে তিনি তৃতীয় তলায় দ্রুত ওঠার সময় দরজার সাথে ধাক্কা খেয়ে গিয়ে পড়েন এবং কিছু সময়ের মধ্যে তিনি মারা যান এমনটিই সহকর্মীরা সুলতানা আক্তারের কাছে বলেছে।
তিনি ম্যানুয়াল গণনার পরিবর্তন চেয়ে বলেন, একটি মাত্র ব্যালট নিয়েই হল সংসদের ভোট কারচুপি করা হয়েছে; কিন্তু জাকসুতে একজন ভোটারের তিনটি করে ভোট গণনা করতে হবে যদি ধারণা মতো ৮০০০ ভোট পড়ে থাকে, তাহলে মোট ২৪ হাজার ভোট গণনা করা লাগবে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে এটি কার্যকরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তারা শারীরিক ও মানসিক ওই চাপ সহ্য করতে পারছে না এবং পদ্ধতিটি বদলানো জরুরি বলেও দাবি করেন তিনি।



























