মিটফোর্ডে লাল চাঁদ সোহাগ হত্যায় আরও দুই জন গ্রেফতার

পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে প্রকাশ্যে লাল চাঁদ সোহাগ (৩৯) নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেপ্তাররা হলেন রাজীব ও সজীব।
যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম সমকালকে নিশ্চিত করেছেন, এ ঘটনায় মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। জানা গেছে, রাজীব পাথরের টুকরো দিয়ে সোহাগকে আঘাত করেন এবং লাশ টেনে রাস্তায় নেওয়ার পাশাপাশি লাশের ওপর লাফালাফি করেছিলেন।
আগে এই হত্যাকাণ্ডে টিটন গাজীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গ্রেপৃত অন্যরা হলেন মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১), তারেক রহমান রবিন (২২), আলমগীর (২৮) ও মনির ওরফে ছোট মনির (২৫)।
হাসপাতালের সামনে ব্যস্ত সড়কে বুধবার প্রকাশ্যে ঘটে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। হত্যার পূর্বে সোহাগকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে এবং ইট-পাথরের টুকরা দিয়ে তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাকে বিবস্ত্র করা হয় এবং শরীরের ওপর লাফান লোকজনও ছিল।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সূত্রে জানা যায়, পুরান ঢাকার কয়েক যুবক পূর্বপরিচয়ের ভিত্তিতে সোহাগকে ডেকে নিয়ে তাকে নির্যাতন ও হত্যা করে। সোহাগ পুরোনো তামার তার ও অ্যালুমিনিয়াম শিটসহ ভাঙাড়ি জিনিসের ব্যবসা করতেন।
পরিবার জানায়, সোহাগ একসময় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে। তিনি ১৪ বছর বয়সী মেয়ে সোহানা (ষষ্ঠ শ্রেণি) এবং ১১ বছর বয়সী ছেলে সোহান (চতুর্থ শ্রেণি) এর জনক ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে র্যাব-১০ কেরানীগঞ্জ থেকে এজাহারভুক্ত আসামি মনির হোসেন ও আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে পুলিশ মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে গ্রেপ্তার করেছিল।
সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পুলিশ ও স্থানীয়রা আরও চারজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তারা হলেন মিটফোর্ড হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারী মো. মনির, অ্যাম্বুলেন্স চালক নান্নু, চকবাজার থানা ছাত্রদলের সদ্য বহিষ্কৃত সদস্য সচিব অপু দাস এবং চকবাজার থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সরোয়ার হোসেন টিটু। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে আজীবনের জন্য তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে।
লাল চাঁদ হত্যাকাণ্ডের মামলাটি গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা হয়। নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম (৪২) মামলাটি করেন। এতে ১৯ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে এবং ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।