শাহ্ নগরের চারা ৩২ জেলায়, পাল্টে গেছে অর্থনৈতিক চিত্র

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার শাহ্ নগর এলাকার কৃষকরা তিন দশক আগেও ধান ছাড়া অন্য কোনো আবাদ করতেন না। তাতে করে বাদবাকি সময় কৃষিজমি পতিত পড়ে থাকতো। কৃষকরাও বছরের প্রায় ৬ মাস হাত গুটিয়ে বসে থাকতেন। লেখাপড়া জানারা চাকরির পেছনে ছুটতেন। সেই এলাকায় দুই দশকের মধ্যে চিত্র পাল্টে গেছে। সেখানে ঘটেছে ফসলের চারা উৎপাদনের নীরব বিপ্লব। চাকরির পেছনে না ছুটে এলাকার অনেক যুবকই জড়িয়েছেন কৃষিতে। সেখানকার উৎপাদিত সবজির চারা নিজ জেলার গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে অন্তত ৩২টি জেলায়। মাত্র তিন মাসের সবজির চারার চলা কারবারে এর বাজার গড়ে উঠেছে অন্তত সাড়ে ৭ কোটি টাকার। কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েক হাজারের। পাল্টে গেছে এলাকার অর্থনৈতিক চিত্র।
শুরুটা যেভাবে হলো
শাহনগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন (৬৫) অন্য ফসল চাষাবাদের পাশাপাশি ১৯৯৫ সালে পরীক্ষামূলক ১০ শতক জমি দুই খণ্ড করে ফুলকপি ও মরিচের বীজ বপন করেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে বীজ বপন করার পর চারা গজালে পরিচর্যা করে বেশ বড় করেন। এরপর নিজের জমিতে চারা রোপণ করে বেশ ভালো আবাদ পান। এভাবে তিনি প্রতি বছর নিজেই চারা উৎপাদন করে নিজের জমিতে শীতকালীন সবজির চাষাবাদ করতে থাকেন। তার দেখাদেখি এলাকার কৃষকরাও উদ্দীপ্ত হয়ে ধানের পাশাপাশি সবজির চাষাবাদ করতে থাকেন। সবজির চারা উৎপাদনের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে এলাকার কৃষকদের মাঝে। কৃষকরা আমজাদের নিকট থেকে চারা নিয়ে চাষাবাদ করতে থাকেন। চাহিদা বাড়ায় আমজাদ হোসেন ‘আঁখি বীজ অ্যান্ড নার্সারি’ নামে সবজির নার্সারি গড়ে তোলেন। দুই দশক আগে এখান থেকে বাণিজ্যিকভাবে সবজির চারা নিজ এলাকা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা চারা নিয়ে চাষাবাদ করতে থাকেন। ধীরে ধীরে ২০০২ সালের পর থেকে এলাকায় প্রায় অর্ধশত সবজির নার্সারি গড়ে ওঠে। এলাকার সবজির চারা যেতে থাকে অন্তত ৩২টি জেলায়। আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই তিন মাস চারা উৎপাদনের সময়। এই তিন মাস শাহনগর এলাকায় বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। এখন সেখানে নার্সারির সংখ্যা বেড়ে আড়াইশ ছাড়িয়েছে।
আগে কৃষির অবস্থা কেমন ছিল
স্থানীয়রা জানান আগে এলাকায় কৃষকরা এক ফসলের বেশি অন্য কোনো ফসলের আবাদ করতেন না। অন্য আবাদ করা যায়, তাতে লাভ হয় বেশি— তা কেউ আমলে নিতেন না। বিঘার পর বিঘা জমি পতিত পড়ে থাকতো। কৃষির প্রতি মানুষের আগ্রহ তেমন ছিল না। শাহনগর এলাকায় সবজির চারার উদ্যোক্তা আমজাদ হোসেনের সাফল্য দেখে কৃষকরা উদ্দীপ্ত হয়ে সবজির চাষাবাদ শুরু করেন। এখন সেখানকার কৃষকরা একেকজন উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেছেন। তারা নিজেরাই চারা উৎপাদন করে অন্য জেলায় বিক্রি করছেন এবং কৃষকদের ধান চাষের পাশাপাশি সবজি চাষে উদ্দীপ্ত করছেন। সবজি চাষের কলাকৌশল শিখিয়ে দিচ্ছেন অন্য জেলার কৃষকদের।
যে-সব গ্রামে চাষাবাদ করছে
শাহনগর সবজি চাষের সূতিকাগার হলেও এখন আরও তিনটি গ্রামের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন করছে। গ্রামগুলো হলো কামারপাড়া, বড় পাথার ও খোট্টাপাড়া। এই চার গ্রামের ২৭০ জন কৃষক এখন বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদনের সাথে জড়িত। ওই এলাকাগুলোই এ সময় গেলে দেখা যাবে ফসলের মাঠে শুধু পলিথিনে মোড়ানো চারার প্লট আর প্লট। বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষি ও ব্যাপারীরা চারা নিতে আসছে। এখন সেখানকার মানুষের দম ফেলার সময় নেই।
যে-সব চারা উৎপাদন হয়
মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন ও টমেটোর চারাই সবচেয়ে বেশি উৎপাদন করা হয়। মরিচের চারার মধ্যে আছে ৭-৮ জাতের। যেমন বিজলি মরিচ, বগুড়া কিং, কারিশমা, টাইগার, কিসমৎ, সুলতান, লাইলা ও লাইট মাস্টার উল্লেখযোগ্য। ফুলকপির মধ্যে আছে শিলা জাত, কুসুম জাত, নারিশ জাতের। বাঁধাকপিও একই জাতের। বেগুন আলতমাশ, মেন্টাল বোম্বাই ও কালিয়া জাত। টমেটোতেও আছে নানা জাতের।
এখান থেকে কেন অন্য জেলার কৃষকরা চারা নেন
শাহনগরসহ এই এলাকার সবজির চারার মান ভালো, ফসলের ও গাছের আকার আকৃতি বড় হয়। উৎপাদনও বাড়ে। চারার সাইজও ভালো। এখানকার উদ্যোক্তা কৃষকরা যা বলে, ফসল চাষাবাদ করতে গিয়ে কথার সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। চারার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, এখানকার চারার বাজারে চাহিদা বেশি ইত্যাদি। যাচ্ছে যে সব উল্লেখযোগ্য জেলায়— সিরাজগঞ্জ, পাবনা, গাইবান্ধা, রংপুর, নওগাঁ, নাটোর, টাঙ্গাইল, শেরপুর, কুষ্টিয়া, জামালপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কিশোরগঞ্জ।
অন্য জেলার কৃষকরা কি বলছেন?
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী এলাকা থেকে কপির চারা নিতে এসেছেন যুব বয়সের কৃষক মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, লেখাপড়া করেছি এইচএসসি পর্যন্ত, এখন কৃষিকাজ করছি। নিজের জমি চাষাবাদ করছি। এখান থেকে গত ৬ বছর যাবত চারা নিয়ে শীতকালীন সবজির চাষাবাদ করে বেশ ভালোই লাভবান হচ্ছি। এখানকার চারার গুণগত মান ভালো। তাই এখান থেকে চারা নিয়েই সবজির চাষাবাদ করে আসছি।
চাকরির পাশাপাশি কৃষিকাজ করেন গাইবান্ধার বোনাপরপাড়া এলাকার যুবক রায়হান আলী। তিনি বলেন, একটি কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি কৃষিকাজ করি। বিশেষ করে শীতকালীন সবজির চাষাবাদ করার জন্য এখান থেকে গত ৩ বছর যাবত চারা নিয়ে গিয়ে বেশ ভালোই উপকৃত হচ্ছি। এখানকার কৃষকরা যেভাবে বলে দেন, সেভাবে চাষাবাদ করি— তাতে ভালো ফলন পাই।
পাইকাররা কি বলছেন?
টাঙ্গাইলের করোটিয়া উপজেলার ক্ষুদিরামপুর এলাকার সবজি চারার ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস। তিনি গত ৮ বছর আগে থেকে এ এলাকা হতে সবজির চারা নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন তার নিজ এলাকায়। তিনি ৩ মাসের এই ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন রাতে এখানে এসে আবাসিক হোটেলে থাকেন। ভোরে ওঠে সবজির খামারে যান। নানা জাতের সবজির চারা কিনে নিয়ে নিজ এলাকায় গিয়ে দুপুরের মধ্যে সবজির চারা বিক্রি করেন। কৃষকরা তার অপেক্ষায় থাকেন। সবজির চারা কৃষকরা তার নিকট থেকে নিয়ে বিকেলের মধ্যে জমিতে রোপণ করেন। এই ব্যবসা করে বেশ ভালোই লাভ হয় বলে জানান তিনি।
দূরের জেলায় যেভাবে পাঠানো হয়
এখানকার সবজির চারা চট্টগ্রাম জেলাতেও যায়। কার্টনে বিশেষ কায়দায় প্যাকেট করে রাতের কোচে পাঠানো হয়। সকালে পৌঁছার পর চাষিরা কোচ থেকে নিয়ে গিয়ে জমিতে লাগান। এছাড়া অন্য জেলার ব্যবসায়ী ও কৃষকরা এসে নিজেরাই নিয়ে যান। চারা ২-৩ দিন পর্যন্ত রাখা যায়, তাতে চারা নষ্ট বা পচে না বলে উদ্যোক্তারা জানান। এছাড়া কুরিয়ারযোগেও পাঠানো হয়।
উদ্যোক্তা কৃষকরা যা বলছেন?
শাহনগর এলাকার সবজি চারার উদ্যোক্তা আলাল-দুলাল নার্সারির মালিক ও শাহনগর সবজি চারা উৎপাদক সমিতির একাংশের সভাপতি উজ্জ্বল হোসেন বলেন, তিনি ২২ বছর যাবত সবজির চারা উৎপাদন করে আসছেন। এখানকার চারার গুণগত মান ভালো এবং ফসলের উৎপাদন বেশি হওয়ায় অন্য জেলার কৃষকদের কাছে এখানকার চারার চাহিদা বেশি। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা এসে রাত্রিযাপন করে সকালে চারা নিয়ে যাচ্ছেন। এ পদ্ধতি চলছে প্রায় ২০ বছর আগে থেকেই। কোনো দিন কোনো কৃষক আজ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করেননি।
কামারপাড়া এলাকার কৃষক আবু সাঈদ বলেন, আমরা এক সময় শুধু ধানের আবাদ করতাম। আমরা জানতাম না অন্য ফসলও করা যায়। বিশেষ করে শীতকালীন নানা জাতের সবজির বিষয়ে আমাদের ধারণা ছিল না। এক পর্যায়ে আমরা কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেরাই চারা উৎপাদন শুরু করে প্রথমে নিজেরা চাষাবাদ করি, এখন করছি বাণিজ্যিকভাবে। তাতে বেশ লাভবান হচ্ছি। চারা বিক্রি করে যে লাভ হয় তা দিয়ে সংসার চলছে এবং অন্য আবাদের অর্থযোগান দিতে পারছি।
উৎপাদনের পরিমাণ ও বেচাকেনা
শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী সেখানে আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসে আগাম জাতের এবং উপযুক্ত মৌসুম সময়ে সবজির চারা উৎপাদন করা হয়। চারা উৎপাদনের পরিমাণ সব মিলিয়ে তিন মাসে প্রায় ৩৫ কোটি চারা উৎপাদন করা হয়। বেচাকেনা হয় আগাম জাতের চারা মরিচের প্রতি হাজার ১৫০০ টাকা। ফুলকপির ১২০০ থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা, বাঁধাকপিরও একই দাম এবং বেগুন এক হাজার টাকা ও টমেটোর চারা ১৫০০ টাকা। বীজ থেকে চারা গজানো এবং বিক্রির উপযোগী করতে সময় লাগে ৪০ দিন। আগাম জাতের চারা অতিবৃষ্টির কারণে এবার চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিধায় সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে দামও বেড়েছে। অন্য সময় এই চারা প্রতি হাজার মাত্র ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। আগাম জাতের চারা এবার টিকেছে মাত্র গড়ে ২ কোটির মতো। সব মিলিয়ে সেখানে চারা বিক্রি হয় গড়ে সাড়ে ৭ কোটি টাকার।
ভালো ব্যবসা হয়েছে আগের বছর
চারার নার্সারি মালিক সমিতির হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত ভালো ব্যবসা হয়েছে। সে সময় প্রতি সিজনে বিক্রি হয়েছে কমপক্ষে গড়ে ৯ কোটি টাকা করে। ২০২৪-২৫ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং লাগাতার বৃষ্টির কারণে উৎপাদন ও বিক্রি কমেছে প্রায় ২ কোটি টাকা।
কর্মসংস্থান হয়েছে
ওই এলাকাকে অনেকেই ‘চারার নগর’ নামেও চেনে। এর সঙ্গে যুক্ত আছে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। রাকিব হাসান নামে এক যুবক বলেন, তিনি এসএসসি পাস করার পর একটি নার্সারিতে ৫ বছর ধরে কাজ করছেন ১৩ হাজার টাকা বেতনে। বাড়িতে থেকে এই কাজ করে যে টাকা পাচ্ছেন, তা দিয়ে বেশ ভালোই আছেন। তার স্ত্রীও একটি নার্সারিতে কাজ করেন।
চারার ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সেখানে বেশ কিছু দোকানপাট, আবাসিক হোটেল গড়ে উঠেছে। চারার নার্সারি পল্লীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বীজ, কীটনাশক, সারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নার্সারিসহ তাতে করে কর্মসংস্থান হয়েছে অন্ততপক্ষে ৫ হাজার মানুষের বলে জানান স্থানীয় শাহনগর বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ী সোহানুর রহমান।
বীজ ও কীটনাশক কোম্পানি
দেশের বিভিন্ন বীজ ও কীটনাশক কোম্পানির প্রতিনিধিরা সবসময় লেগেই থাকেন সেখানে। তবে কৃষকরা বীজ বপনের পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই বীজ নেন। কীটনাশকের ক্ষেত্রেও তাই। এক কেজি মরিচের বীজ বিক্রি হয় কমপক্ষে ৭০ হাজার টাকা, কপির বীজ এক লাখ ৪০ হাজার টাকা, বেগুনের বীজ এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও টমেটোর বীজ একই দাম। এত দামি বীজ নিয়ে কৃষক যাতে প্রতারিত না হন সে জন্য কোম্পানিগুলো তাদের প্রদর্শন প্লট কৃষকদের ভিজিট করান।
বীজ কোম্পানির এক প্রতিনিধি বলেন, সেখানকার উদ্যোক্তা কৃষকরা এতটাই সচেতন যে ১০০টি বীজ নিলে অন্ততপক্ষে ৯৫টি চারা গজাতে হবে, তবেই সেখানকার উদ্যোক্তা কৃষকরা বীজ নেবেন; নচেৎ নেবেন না। যদি কোনো কারণে ৯০টি গজায়, তাহলে কৃষকদের লাভ হবে না।
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা
শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনা খাতুন বলেন, আশির দশক থেকে স্থানীয় কৃষকরা নিজেদের প্রয়োজনে চারা উৎপাদন শুরু করলেও বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয় দেড় থেকে দুই দশক আগে। এখানকার চারার মান ভালো হওয়ায় দেশের ৩০-৩২টি জেলা থেকে কৃষক ও ব্যবসায়ী এসে চারা নিয়ে যাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের সার্বক্ষণিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মাঝে মাঝে ক্ষতিগ্রস্তও হয়। তবে কৃষকরা আবার নানা উপায়ে তা পুষিয়ে নেন। সেখানকার মাটি চারা উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত ভালো।
প্রথম উদ্যোক্তা কৃষক
শাহনগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন প্রথম নিজের জমিতে চারার জন্য বীজ বপন করেছিলেন। এখন সেখান থেকে বাণিজ্যিকভাবে সম্প্রসারণ হয়েছে। আমজাদ হোসেন বলেন, আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। আমি যুবক বয়সে আশির দশক থেকে কৃষিকাজ করে আসছি। কিন্তু আমি দেখলাম কৃষির মধ্যে বৈচিত্র নেই— কেবল ধান চাষের মধ্যে কৃষকরা সীমাবদ্ধ। আমি তখন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের জন্য বীজ বপন করলাম। প্রথমবারেই বেশ ভালো ফলন হলো, স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সাড়া পড়ে গেল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে যায়। এখন ছড়িয়েছে দেশব্যাপী। তিনি আরও বলেন, এখান থেকে যারা চারা নেন তাদেরকে ক্যাশ মেমো দেওয়া হয় না, কারণ কোনো নার্সারির নিবন্ধন নেই। তাতে করে ক্রেতাদের প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কৃষি বিভাগকে দ্রুত নিবন্ধনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, রোগমুক্ত সুস্থ সবল চারা উৎপাদনের জন্য দরকার উপযুক্ত মাটি ও দক্ষ কারিগর— যা শাজাহানপুরে রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক (ডিডি) সোহেল মো. শামসুদ্দিন ফিরোজ বলেন, সেখানকার চারার বাজার আরও যেসব জেলায় বাকি আছে সেসব জেলাতেও ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আর নার্সারিগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শাহনগরের চারা উৎপাদনের মতো ঘটনা দেশের আর কোথাও নেই। জেলা কৃষি বিভাগ এর জন্য গর্বিত।