বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

|১৫ আশ্বিন ১৪৩২

নেত্রকোণা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:৩০, ১৯ আগস্ট ২০২৫

নেত্রকোণায় স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে মারধর ও ধর্ষণের চেষ্টা, আদালতে মামলা

নেত্রকোণায় স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে মারধর ও ধর্ষণের চেষ্টা, আদালতে মামলা
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার পূর্বধলায় এক স্বামী পরিত্যক্তা নারী ও তাঁর স্বজনদের ওপর প্রকাশ্যে হামলা, মারধর ও ধর্ষণের চেষ্টা চালানোর অভিযোগে চারজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলা গ্রহণ করে অনুসন্ধানের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নেত্রকোণা জোনকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, অভিযোগকারী শিরীন আক্তার শিল্পী (৩৭), স্বামী-প্রয়াত আনোয়ার হোসেন, পিতা-প্রয়াত আব্দুল আজিজ, সাং-গোহালাকান্দা, থানা- পূর্বধলা; নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধিত ২০২৫) এর ৯(৪)(খ) ও দণ্ডবিধির ৩৪১/৩২৩ ধারায় এই মামলা দায়ের করেন।

অভিযোগে বলা হয়, গত ৪ জুলাই (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে ৭টার মধ্যে বাদী শ্যামগঞ্জ বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই সময় আসামি ফারুক (৩৭), মুন্না মিয়া (২৮), রনি মিয়া (২৩) ও সাগর (২২) মিলে তাঁর পথরোধ করে। ফারুক হাতে থাকা লাঠি দিয়ে বাদীর শরীর ও গোপনাঙ্গে আঘাত করেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করা হয়।

এ সময় বাদীর স্বজন ও সাক্ষী লাকী আক্তার ও কুলসুম বেগম এগিয়ে এলে তাঁদের ওপরও হামলা চালানো হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মুন্না মিয়া লাকী আক্তারের শরীরে কামড় দিয়ে গুরুতর জখম করে এবং তাঁকে উলঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে ৩ থেকে ৫ নম্বর সাক্ষী রুবেল, সাইদুল রহমান মাসুদ ও জব্বার এগিয়ে আসলে আসামিরা সবাইকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এতে একাধিক ব্যক্তি আহত হন।

ঘটনার পরদিন ৫ জুলাই আহতরা নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। একই দিন সন্ধ্যায় পূর্বধলা থানায় মৌখিকভাবে মামলা করার চেষ্টা করলে পুলিশ আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়।

বাদী আদালতে অভিযোগ করেন, আসামিরা এলাকায় প্রভাবশালী, উচ্ছৃঙ্খল ও নারী নির্যাতনকারী হিসেবে পরিচিত। তাঁদের বিরুদ্ধে পূর্বেও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বাদী কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, নেত্রকোনার বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) অভিযোগকারীর জবানবন্দি হলফনামা গ্রহণ করে পিবিআই নেত্রকোনাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে ভিকটিমের মেডিকেল রিপোর্ট, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও অন্যান্য তথ্যসহ অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাদীর পক্ষ থেকে আদালতে চিকিৎসার কাগজপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রও দাখিল করা হয়েছে। বাদী আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছেন।