এত দামি ফোন নিয়ে ঘুরবেন, ছিনতাই তো হবেই!

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা থেকে মাত্র তিন মিনিট হাঁটার দূরত্বে ছিনতাইয়ের শিকার হন গণমাধ্যমকর্মী আহমাদ ওয়াদুদ। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে তিনজন ছিনতাইকারী চাপাতি দিয়ে আঘাত করে তাঁর মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ঘটনায় তিনি শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেলেও তা গুরুতর নয়।
ঘটনার পরপরই ওয়াদুদ মোহাম্মদপুর থানায় যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতার বদলে অপ্রত্যাশিত ও বিরূপ আচরণের মুখে পড়েন। থানায় দায়িত্বে থাকা এসআই জসিম তাঁকে অপেক্ষা করতে বলেন। অভিযোগ জানাতে গেলে সাদা পোশাকের এক পুলিশ সদস্য শার্টের বোতাম লাগাতে বলেন। চাপাতির কোপে বোতাম খুলে গিয়েছিল বলে ওয়াদুদ ব্যাখ্যা দিলেও তাঁকে আরও বোতাম লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযোগ লিখে জমা দিতে চাইলে নানা অজুহাত দেওয়া হয়। কলম না দিয়ে শুধু কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হয়, পরে নিজস্ব কলম দিয়ে অভিযোগ লিখে জমা দিলেও কোনো কপি দেওয়া হয়নি। এরপর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসানের কক্ষে গেলে তিনি বলেন, ‘আমি ওসি হয়েও কম দামি ফোন ব্যবহার করি। আপনি এত দামি ফোন নিয়ে ঘুরবেন, ছিনতাই তো হবেই!’
ওসির এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই পুলিশের এমন মনোভাবকে ভীতিকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেন।
পরবর্তীতে এএসআই আনারুল ঘটনাস্থলে ওয়াদুদকে নিয়ে যান। ছিনতাইকারীদের একজনকে তিনি শনাক্তও করেন। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে না গিয়ে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ফিরে আসে এবং বলে, ‘এখন আর পাওয়া যাবে না, রাতে এসে অভিযান চালাব।’
এ ঘটনায় আহমাদ ওয়াদুদ তাঁর ফেসবুকে পুলিশের আচরণ নিয়ে পোস্ট দেন, যা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এস এন নজরুল ইসলাম জানান, তদন্ত চলছে এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানার দুই পুলিশ সদস্যকে ইতিমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকি সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। এ ছাড়া ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ওসির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।