শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানির আগ্রহ কমার কারণ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর নানা খাতে কোম্পানিগুলোর খরচ বেড়ে যাওয়ার ফলে শুধুমাত্র পাঁচ শতাংশ করসুবিধা পাওয়ায় ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে আগ্রহী হচ্ছে না। এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে উপস্থিত নানা বিধিনিষেধ ও দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কারণে ভালো মানের কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে ভয় পায়। লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হলে কোম্পানিকে জটিল জবাবদিহির মুখে পড়তে হয় এবং আইপিও প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ায় অর্থ উত্তোলনে দেরি হয়। এছাড়া, তালিকাভুক্তির পর উল্লেখযোগ্য করসুবিধা না পাওয়ায় ও সম্পদের যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ায় ভালো কোম্পানি আগ্রহ হারাচ্ছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত ‘পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণ: টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন কাঠামো’ শীর্ষক আলোচনায় এই সব প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়। সভায় পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সম্প্রসারণের পথ নিয়ে বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মতামত শোনা যায়। প্রধান অতিথি আনিসুজ্জামান চৌধুরী পুঁজিবাজারকে দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে তুলে ধরে বলেন, পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে, যদিও ব্যাংক খাতের তরলতা সংকট অর্থনীতিকে এখনও বাধাগ্রস্ত করছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বলেন, সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা শেয়ারবাজারকে দীর্ঘদিন শিশু পর্যায়ে রেখেছে, যার ফলে বাজারের স্ব-সক্ষমতা এখনো গড়ে উঠেনি। গত ১৫ বছরে তালিকাভুক্ত ১৩৮টি কোম্পানির মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। আর উদ্যোক্তা উজমা চৌধুরী শেয়ারবাজারের পণ্য বৈচিত্র্যের অভাব ও পরিকল্পনার বাস্তবায়নে অগ্রগতি না হওয়াকে বড় সমস্যা হিসেবে দেখেন।
সভায় নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ার দীর্ঘতা, সম্পদ মূল্যায়নের দুর্বলতা, প্রণোদনার অভাব, শেয়ার ধারণে বাধ্যবাধকতা, সরাসরি তালিকাভুক্তিতে বৈষম্য এবং তালিকাভুক্তি বাতিলের বিধান না থাকা ইত্যাদি প্রতিবন্ধকতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়, যা পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নের পথে বড় বাধা হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে।