‘চল্লিশ বছরের ব্যবসায়িক জীবনে এমন কঠিন সংকট কখনও দেখিনি’

চল্লিশ বছরের ব্যবসায়িক জীবনে এমন কঠিন সংকট আর কখনও দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এবং হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ। রোববার (২০ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ইউএস রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত যাদের ওপর নির্ভরশীল যুক্তরাষ্ট্রের সেই বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো মার্কিন সরকারের সঙ্গে চলমান ট্যারিফ আলোচনার বিষয়ে খুবই সক্রিয়। এসব ব্র্যান্ড থেকে বারবার হতাশার খবর আসছে। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষে ফল ইতিবাচক হবে বলে মনে হচ্ছে না।
এ কে আজাদ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশ সরকারের কৌশল এবং দক্ষতা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, লবিস্ট নিয়োগের অনুরোধ জানিয়েছি, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বার্তা পাঠিয়েছি। তখন বলা হয়েছিল, ৯৫ শতাংশ কাজ এগিয়েছে। অথচ বাস্তবতা ভিন্ন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকেও একটি ব্র্যান্ড থেকে আমাকে মেইল পাঠানো হয়েছে। তারা জানতে চেয়েছে, ১ আগস্ট থেকে উৎপাদিত পণ্যে নতুন ট্যারিফ প্রযোজ্য হলে আমি কত শতাংশ শেয়ার করব। ওই ব্র্যান্ডের কাছে বছরে ৮০ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করি, যার থেকে আমার লাভ মাত্র ১.৩৭ মিলিয়ন ডলার। সেখানে যদি আমাকে ৩৫ শতাংশ শেয়ার করতে হয়, তাহলে আমি কী নিয়ে ব্যবসা করব?’
সরকারের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ কে আজাদ বলেন, ‘সাত-আট মাস পর আপনারা চলে যাবেন, কিন্তু আমরা কোথায় যাব? আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? আমাদের কার কাছে রেখে যাবেন?’
কারও নাম না নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকের ধারণা, কারও মাথার ছায়ায় থেকে সব সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারাও মার্কিন ট্যারিফ ইস্যুতে সরকারের অগ্রগতির অভাব এবং সম্ভাব্য বিপর্যয়ের আশঙ্কা তুলে ধরেন। আলোচনা ঘিরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ এবং কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপের জোর দাবি উঠে আসে।