বেহেশত-দোজখের মাঝামাঝি ইউনূসের সরকার

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি মন্তব্য করেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার একটি জটিল ও অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে, যা তিনি ‘বেহেশত ও দোজখের মাঝামাঝি’ বলে আখ্যা দেন।
রোববার (৬ জুলাই) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক রাজনৈতিক বিশ্লেষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমে কোনো ধারাবাহিকতা নেই। কোনো রাষ্ট্রে এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করলে তা ভয়াবহ পরিণতির দিকে যায়। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে জনসমর্থনের ঘাটতির পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কেও সংকট দেখা দিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
তার ভাষ্যে, ‘সরকারের প্রশংসাকারীরা ভাড়াটিয়া, আর বিরোধীরা ব্যক্তিস্বার্থ দ্বারা চালিত। এই টানাপড়েনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর বিষয় ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। সীমান্তে অচলাবস্থা, বাণিজ্যে স্থবিরতা এবং আমদানিতে বাধা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।’
তিনি সতর্ক করেন, ‘ভারত থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি বন্ধ হলে আমাদের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্য দেশ থেকে বেশি দামে সেই পণ্য আমদানি করতে হলে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে।’
রনি আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন এখন সরকারের জন্য অত্যাবশ্যক। চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ভারত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে, যা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থানকে জটিল করে তুলছে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকেও তুলে ধরেন, বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কোয়াড ও ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে যুক্ত করতে চায়। তারা ভারতের সঙ্গে আলোচনা করছে যাতে বাংলাদেশকে চীনের প্রভাব থেকে দূরে রাখা যায়। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ড. ইউনূসের সরাসরি যোগাযোগ ও সমঝোতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’
তার ভাষ্যে, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই সরকার গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে এবং তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে চীনের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক সরকারের জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়াতে পারে।’
তিনি বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাংলাদেশের প্রতি সদয় বক্তব্য দিয়েছেন, যা ব্যতিক্রমী। ড. ইউনূস যদি এই বার্তা গ্রহণ করেন, তবে তা রাশিয়া-চীন বলয় থেকে বিচ্ছিন্নতার ইঙ্গিত হতে পারে।