বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

|১৪ আশ্বিন ১৪৩২

তমাল

প্রকাশিত: ২০:২৮, ১৬ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১৩:৪২, ১৯ জুলাই ২০২৫

ভারত কি বাংলাদেশের বন্ধু না আওয়ামী লীগের?

ভারত কি বাংলাদেশের বন্ধু না আওয়ামী লীগের?
ছবি: ইন্টারনেট

আমারা অনেকেই ভারতকে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সহায়তাকারী হিসেবে পরম বন্ধু হিসেবে গণ্য করি। কেউ কেউ ভারতের নাম শুনতেই প্রভু মনে করে পূজা করা শুরু করি (রুপক অর্থে)। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকেই ভারত বন্দনা ছাড়া চলতেই পারে না। আসলেই কি ভারত আমাদের বন্ধু? আসুন আমরা গত ৬ মাসের ২ টা ঘটনা জেনে নেই।

গত ডিসেম্বরে (২০২৪) রয়েল (ছদ্মনাম) তার চিকিৎসার জন্য কোলকাতায় গিয়েছে। ওখানে গিয়ে হোটেলে যেতেই বাংলাদেশীদের সাথে খারাপ আচরণের প্রমাণ তিনি হাতে নাতে পান। একবার রাগ করে চলে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শারীরিক ও আর্থিক বিষয়ে চিন্তা করে চিকিৎসা শেষ করে চলে আসেন। হাসপাতালে শুধু ডাক্তার ভালো আচরণ করেছে কিন্তু অন্যান্য স্টাফের ব্যবহার ছিলো চোখে পড়ার মত। ২য় ঘটনা গত সপ্তাহে (জুলাই এর ১ম সপ্তাহে) আমার বন্ধু তার এক হিন্দু সহকর্মীর প্রবীরের চিকিৎসা( থ্যলামাস হাস্পাতালে) করাতে ভারতে শিলিগুড়ি গিয়েছিল। পাশাপাশি তার কোম্পানির কিছু কাজ ছিল বোম্বেতে। হাসপাতালের চিকিৎসা শেষে মুম্বাই যাওয়ার পথে তিনটি হোটেলের বুকিং (এপস এ) কনফার্ম করে। কিন্তু তারা মুম্বাই যাওয়ার আগেই বাংলাদেশী জানতে পেরে তাদের রুম ক্যান্সেল করে দেয়। এরপর প্রবীর শিবাজি বিমানবন্দরের পাশের হোটেলে (৪র্থ) হিন্দিতে সরাসরি কথা বলে। প্রবীর বুজতে পারে ম্যানেজার বাংগালী তাই নিজেকে বাংগালী পরিচয় দিয়ে রুম বুকিং করে। ম্যানেজার বলে চলে আসেন সমস্যা নেই। রাত ১১ টা ২৫ টায় মুম্বাই হোটেলে পৌঁছার পরে লাগেজ নামানোর পর ঘটে সমস্যা। ম্যানেজার যখন আধার কার্ড চাইলো তখন প্রবীর পাসপোর্ট দিতেই তারা তাদের কে হোটেলে থাকতে দিবেনা বাংলাদেশী বলে! ম্যানেজার ভেবেছিল তারা ইন্ডিয়ান বাঙালি। 

বলেন তো- রাত সারে এগারোটায় একজন রোগীসহ ভীন দেশী মানুষ লাগেজ, টাকা সহ কোথায় যাবে? তাদের সরকার থেকে বাংলাদেশীদের হোটেলে থাকা নিষেধ। এটা কেমন বন্ধু রাষ্ট্র? পরে অনেক অনুনয় বিনয় করে দালালের মাধ্যমে ডাবল টাকা দিয়ে দূরের একটি হোটেলে (শাই রিলা) কোন রকমে রাত কাটায়। পরে মুম্বাই কাজ শেষ করে গোয়াতে গিয়ে ২ দিন থাকে। আসার দিন মুম্বাইয়ের শিবাজী এয়ারপোর্টে থেকে উঠতে হবে তাই রাত ১১ টায় মুম্বাই এয়ারপোর্টে এসে রাত কাটায় কারন হোটেলে থাকতে দিবে না। ভোরে ফ্লাইট সেহেতু  রাতে এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে ওয়েট করতে হয়। বাংলাদেশের যাত্রিদের জন্য যে লাউঞ্জ ছিল নিচ তলায় তাতে ভাঙা চেয়ার, খাবারের তেমন কোন ব্যবস্থা ছিলো না আর শৌচাগার ছিল জঘন্য। গাদাগাদি ছিল কারণ বাংলাদেশগামী অনেক কানেক্টিং যাত্রি ছিল। পরে প্রবীর খোঁজ নিয়ে জানতে পারে রাজনৈতিক কারেনে মুম্বাই, আহমেদাবাদ, ব্যংগালুর,দিল্লি প্রভৃতি রাজ্যে বাংলাদেশিদের  সাথে এরুপ করা হয়। আমার বন্ধু রাতে যে হোটেলে ছিলো  তাদের সাথে আলাপচারিতা কালে জানতে পারে যে, বাংলাদেশীরা তাদের নির্বাচিত সরকারকে জোর করে নামিয়েছে যা খুব খারাপ। পরে আমার বন্ধু যখন পুরো ঘটনা বলে তারপর তাদের ধারণা কিছু ক্লিয়ার হয়। তাহলে বলেন তো ভারত কি আমাদের সাধারণ জনগণের বন্ধু? না আওয়ামীলীগের বন্ধু? এটা কি কোন প্রতিবেশীর আচরণ?  

৫ আগষ্টের পর আমরা তাদের কে শক্ত করে জবাব দিতে পারিনি কেন? আমাদের দেশের কোন টিভি চ্যানেল তাদের দেশে চলে না অথচ তাদের সব চ্যানেল আমাদের এখানে চলে যার ফলে ভারতীয় পণ্যের বাজারে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশ। অনতি বিলম্বে তাদের সব চ্যানেল বন্ধ রাখতে হবে যদি আমাদের চ্যানেল তাদের ওইখানে চলতে না দেয়। বাংলাদেশের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে অথবা ভারতের বিকল্প অন্যদেশের সাথে চিকিৎসার যোগাযোগ উন্নয়ন করতে হবে। 

ভারতীয় পণ্যের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে জবাব দিতে হবে এ সরকার কে কারন এই সরকার রাজনৈতিক সরকার নয় জনগনের সরকার। ভারত শুধু নিজ স্বার্থে একটি দেশের নির্দিষ্ট দলকে সাপোর্ট দের যার ফলে কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে ভারতের সম্পর্ক নেই। তারা জনগণের সাথে সম্পর্ক করতে চায় না। আর যারা ভারত নামে অন্ধভক্ত তাদের বলবো জেনে নিন তাদের চরিত্র। ঘুরে আসা ব্যক্তির সব রেকর্ড আমার নিকট সংগ্রহে আছে। কেউ চ্যালেঞ্জ করতে চাইলে করতে পারেন।
যদি ভারতের সরকার বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু হিসেবে আসতে পারে তবে তাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করলে আমার কোন আপত্তি নেই।

লেখক: ফ্রিল্যান্সার

সর্বশেষ