বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডে নাশকতার প্রমাণ খুঁজছে সরকার

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সাত ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে শুরু হওয়া এ আগুনে বিমানবন্দরের কিছু অংশে কার্যক্রম ব্যাহত হলেও রাত ৯টার পর থেকে ফ্লাইট চলাচল ও অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিক হয় বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
আগুনের সূত্রপাত কীভাবে, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
সংস্থাটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, 'খোলা জায়গায় অতিরিক্ত বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার কারণ এখনো নিশ্চিত নয়, তবে ব্যাপক তদন্ত চলছে।'
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের যেখানে আগুন লেগেছে সেটি ছিল আমদানি কার্গো এলাকা, রপ্তানি কার্গো পুরোপুরি নিরাপদ রয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অগ্নিকাণ্ডের কারণে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় ফ্লাইটের যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় বিমানবন্দরের ভেতরেই।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ঢাকার মিরপুরের একটি পোশাক কারখানা, চট্টগ্রামের সিইপিজেড এলাকার একটি গার্মেন্টস কারখানা এবং সর্বশেষ বিমানবন্দরের এই আগুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে এসব কি নিছক দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে কোনো নাশকতার ইঙ্গিত আছে?
শনিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাম্প্রতিক এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করছে। মানুষের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এসব ঘটনা যদি আতঙ্ক বা বিভাজন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়ে থাকে, তবে তা কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনার কারণ চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা যায়নি। তবে একাধিক স্থানে ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তারা সমন্বিত বিশ্লেষণ শুরু করেছেন। দেশজুড়ে বাড়তে থাকা এসব অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, আর সরকারও এখন নাশকতার কোনো সূত্র খুঁজে বের করতে তৎপর।
সদ্য সংবাদ/এমটি