ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক লাইফ সাপোর্টে

ভাষাসৈনিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বারডেমের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. কানিজ ফাতেমার তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। কিডনির সমস্যা ছাড়াও সম্প্রতি তিনি কয়েকবার ‘মাইল্ড স্ট্রোক’-এর শিকার হয়েছেন।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় গত রোববার তাকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে অবস্থানকালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ১৩ বা ১৪ সেপ্টেম্বর তাকে দেখতে গিয়ে চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দেন। বর্তমানে সেই সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আহমদ রফিক নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের একটি ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন। ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া এই ভাষাসৈনিক ২০০৬ সালে স্ত্রীকে হারান এবং নিঃসন্তান। তার ব্যক্তিগত সংগ্রহে বিপুলসংখ্যক বই আছে, তবে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সম্পদ নেই।
ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রাবন্ধিক ইতিহাসবিদ হিসেবে তিনি শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। দুই বাংলার রবীন্দ্রচর্চায় তার অবদান অনন্য; কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হলে অস্ত্রোপচার করা হলেও ফল আশানুরূপ হয়নি, ২০২৩ সাল থেকে তিনি প্রায় দৃষ্টিহীন। ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে যায়। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষা আন্দোলনে তার অবদানের জন্য দেশের বুদ্ধিজীবী মহল আহমদ রফিকের উন্নত চিকিৎসা ও রাষ্ট্রীয় সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।