‘বড়লোকদের গলা কাটেন কিন্তু গরীব রোগীদের ১৪-১৫টি টেস্ট দেয়া বন্ধ করেন’

বেসরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়নে মুনাফার ১০ শতাংশ পুনর্বিনিয়োগ করলে বিদেশমুখী রোগীর সংখ্যা কমবে, বরং বিদেশ থেকে অনেকে বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘বড়লোকদের গলা কাটেন সমস্যা নাই। কিন্তু গরীব রোগীদের ১৪ থেকে ১৫টি টেস্ট দেয়া বন্ধ করেন’।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর মিন্টু রোডের শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা দেওয়া হয়, তবে রোগীদের কিছু অভিযোগ রয়েছে। প্রথমত, ডাক্তাররা অনেক সময় রোগীর কথা শোনেন না। প্রেসক্রিপশন লেখার সময় রোগীর দিকে তাকিয়েই কেবল ‘হ্যাঁ’ বলেন। এতে রোগীর সঠিক সমস্যাটা বোঝা হয় না।’
অহেতুক টেস্টের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অনেক চিকিৎসক রোগী আসতেই ১৪-১৫টি টেস্ট দেন। আমার বাসার এক হেল্পিং হ্যান্ড ঢাকার এক হাসপাতালে গিয়েছিল, তাকে ১৪টি টেস্ট দেয়া হয়। সে ক্ষুব্ধ হয়ে ময়মনসিংহ ফিরে যায়, টেস্ট ছাড়াই সুস্থ হয়ে ওঠে। গরিব মানুষের প্রতি এ ধরনের অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। বড়লোকদের গলা কাটুন সমস্যা নেই, কিন্তু গরিব রোগীদের এমন বোঝা চাপাবেন না।’
নির্দিষ্ট ওষুধ কিনতে বাধ্য করার প্রসঙ্গেও তিনি প্রশ্ন তোলে বলেন, ‘পৃথিবীর আর কোথাও কি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি প্রতিদিন ডাক্তারদের কাছে উপস্থিত থাকে? বড় হাসপাতালের ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল? কেন রোগীকে নির্দিষ্ট ওষুধ কিনতে বাধ্য করা হবে?’
বাংলাদেশের চিকিৎসা খাত নিয়ে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এখনই সচেতন না হলে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বাজার হাতছাড়া হবে। মানোন্নয়নে মনোযোগ দিন, তাহলে মানুষ বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবে না। বরং বিদেশ থেকে অনেকে বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে আসবে।’
তিনি আরো বলেন, চিকিৎসা কর্মীদের সুবিধা বাড়ানো এবং হাসপাতালের উন্নয়নে মুনাফার একটি অংশ পুনর্বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতকে বিশ্বমানে উন্নীত করা সম্ভব।