মিয়ানমার তুমুল সংঘর্ষ, মিজোরামে শরণার্থী স্রোত

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা-বিরোধী দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় দেশটির হাজার হাজার নাগরিক প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে প্রতিবেশী ভারতের মিজোরাম রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন। সোমবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ভারতের একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, ২ জুলাই মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় চিন রাজ্যে চিন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (সিএনডিএফ) ও চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স-হুয়ালংরাম (সিডিএফ-এইচ) এর মধ্যে কৌশলগত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর থেকেই হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মিজোরামে প্রবেশ করেন।
পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে প্রায় চার হাজার শরণার্থী মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন।
মিয়ানমারের চিন রাজ্যের সঙ্গে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সরাসরি সীমান্ত রয়েছে। এ দুই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে জাতিগত ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কও বিদ্যমান। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিজোরাম বহু শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে আসছে।
মিজোরামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে সাপদাঙ্গা জানান, নতুন করে শরণার্থীরা রাজ্যে প্রবেশ করেছেন এবং তাদের সংখ্যা তিন হাজার হতে পারে। তিনি বলেন, ‘চীন রাজ্যের সংঘর্ষ আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। মানুষ নিরাপত্তার জন্য এসেছে, আর মানবিক কারণে আমরা তাদের খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করছি।’
ভারতের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, রোববার রাত পর্যন্ত রাজ্যের চাম্পাই জেলার জোখাওথার ও সাইখুমফাই গ্রামে মোট ৩ হাজার ৯৮০ জন শরণার্থীকে নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে এই সংখ্যা পরিবর্তনশীল বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রথমে তুলনামূলক কমসংখ্যক মানুষ এলেও সংঘর্ষ তীব্র হওয়ায় সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো থেকে এখন আরও বেশি মানুষ পালিয়ে আসছেন।
এ বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।