মালয়েশিয়ার ২৪ লাখ কলিং ভিসার খবরে বিভ্রান্তি

মালয়েশিয়ায় নতুন করে ২৪ লাখ কর্মী নিয়োগের ঘোষণা— এমন একটি খবর বাংলাদেশে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে বাংলাদেশ হাইকমিশন, কুয়ালালামপুর জানিয়েছে, এই সংখ্যা সঠিকভাবে উপস্থাপন হয়নি এবং পুরো বিষয়টি কিছুটা বিভ্রান্তিকর।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতোশ্রী সাইফুদ্দিন নাসিউশন ইসমাইল দেশটির গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে খোলা থাকবে কলিং ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া। তবে এটি মোট ২৪ লাখ কর্মী নিয়োগ নয়, বরং মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার ১৫% বিদেশি শ্রমিক রাখার নীতির পরিপ্রেক্ষিতে অনুমানভিত্তিক একটি সংখ্যা। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ২০ লাখ বিদেশি কর্মী রয়েছেন, ফলে বাড়তি নিয়োগের সুযোগ রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ থেকে ৬ লাখ।
বাংলাদেশের জন্য এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট একটি কোটা বরাদ্দ থাকতে পারে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, বাংলাদেশ থেকে বছরে ২ থেকে আড়াই লাখ কর্মী নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থান সুযোগের খাতসমূহ:
নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কৃষি, বাগান, খনিজসহ ১৩টি উপখাতে বিদেশি শ্রমিক নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে:
সার্ভিস খাত: রেস্তোরাঁ, লন্ড্রি, গার্ড, ক্লিনিং ইত্যাদি
নির্মাণ খাত: শুধু সরকারি প্রকল্পে নিয়োগ
উৎপাদন খাত: এমআইডিএ অনুমোদিত প্রকল্পে অগ্রাধিকার
প্রতিবারের মতো এবার আর ব্যক্তি বা এজেন্ট নয়, নিয়োগ হবে সরকার অনুমোদিত খাতভিত্তিক অফিসিয়াল এজেন্সির মাধ্যমে। প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করবে ফরেন ওয়ার্কার্স টেকনিকাল কমিটি এবং জয়েন্ট কমিটি।
প্রতারকচক্র সম্পর্কে সতর্কবার্তা
এই ঘোষণা ঘিরে বাংলাদেশে কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে অগ্রিম অর্থ, পাসপোর্ট ও মেডিকেল ফি সংগ্রহ শুরু করেছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন ও মালয়েশিয়ান দূতাবাস।
১ আগস্ট হাইকমিশনের সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাবাহ প্রদেশে কর্মী পাঠানোর কোনো চুক্তি বা এমওইউ নেই। কিছু প্রতারকচক্র এই প্রদেশে কর্মী পাঠানোর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে অর্থ ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করছে।
হাইকমিশন ও দূতাবাসের আহ্বান, চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়া পর্যন্ত কোনো রকম লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য শ্রমিকদের সতর্ক থাকতে হবে।
বিনা খরচে মালয়েশিয়া যাওয়ার সম্ভাবনা
সরকারি পর্যায়ে চলমান আলোচনার ফলে "জিরো কস্ট মডেল" বা বিনা খরচে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এতে করে শ্রমিকরা অতিরিক্ত দালাল খরচ, ভিসা জালিয়াতি এবং প্রতারণা থেকে রক্ষা পাবেন।
সতর্ক থাকুন, যাচাই করুন, প্রতারিত হবেন না।
নতুন সুযোগ বাস্তবায়ন হলে সরকারিভাবে জানানো হবে — এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।