পর্তুগালের নতুন অভিবাসন আইন, চিন্তার ভাঁজ পড়েছে অভিবাসীদের কপালে

নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নতুন অভিবাসন আইন অনুমোদন করেছেন পর্তুগালের রাষ্ট্রপতি মার্সেলো রেবেলো দে সোজা। জাতীয় সংসদে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে পাস হওয়া এই আইনটি শিগগিরই কার্যকর করা হবে।
নতুন এই আইনে রয়েছে নানান বিধিনিষেধ। বিদেশিদের দেশটিতে অবস্থান, কর্মসংস্থান ও পারিবারিক পুনর্মিলনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে যা নিয়ে প্রবাসীদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।
জাতীয় সংসদের ৭০ শতাংশের বেশি সদস্য এই আইনটিকে সমর্থন করেছেন। আইনটি পর্তুগালে অভিবাসীদের প্রবেশ, অবস্থান, বহিষ্কার ও নাগরিকত্ব অর্জনের পূর্ববর্তী বিধানসমূহের (২০০৭ সালের আইন নম্বর ২৩) সংশোধন হিসেবে পাস হয়েছে।
নতুন আইনে বিদেশি নাগরিকদের জন্য এতদিন বিদ্যমান কিছু সুবিধা বাতিল বা সীমিত করা হয়েছে। কঠোর করা হয়েছে কর্মসংস্থান (জব) ভিসার নিয়ম। এখন থেকে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট যোগ্যতার পেশাজীবীরাই কর্মসংস্থানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সাধারণ শ্রমিক বা অদক্ষ পেশায় আগ্রহীদের জন্য ভিসা প্রাপ্তির সুযোগ অনেকটাই কমে যাবে।
পারিবারিক পুনর্মিলনেও এসেছে কঠিন বিধিনিষেধ। এখন থেকে পরিবার নিয়ে পর্তুগালে আসতে হলে আবেদনকারীর ন্যূনতম দুই বছর বৈধভাবে অবস্থান করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া, দম্পতি হিসেবে আবেদনকারীদের যৌথভাবে কমপক্ষে ১৮ মাস একসঙ্গে বসবাসের প্রমাণ দিতে হবে—যা আগে কখনোই প্রয়োজন ছিল না।
পর্তুগিজ ভাষাভাষী দেশগুলোর নাগরিকদের জন্যও নতুন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এতদিন পর্তুগিজ ভাষাভাষী দেশগুলোর নাগরিকরা কিছু বিশেষ সুবিধা ভোগ করলেও, এখন তাঁদের জন্যও অতিরিক্ত শর্ত প্রযোজ্য হবে।
তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান, শারীরিক বা মানসিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত শিথিল রাখা হয়েছে। তবে এসব ব্যতিক্রমমূলক সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে সরকারি অনুমোদনের ওপর নির্ভর করবে।
রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত আইনের কিছু সংবিধানবিরোধী ধারা সংশোধন করা হয়েছে। এর আগে দেশটির সাংবিধানিক আদালত আইনটির পাঁচটি ধারায় আপত্তি জানিয়েছিল। নতুন সংস্করণে সেই আপত্তিগুলো সমন্বয় করা হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে কট্টর ডানপন্থী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অভিবাসনবিরোধী কার্যক্রম বেড়েছে। মানবিক অভিবাসী-বান্ধব দেশ হিসেবে পরিচিত পর্তুগাল নতুন এই আইনের মাধ্যমে যেন প্রবাসীদের কাছে ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সদ্য সংবাদ/ হাফিজ আল আসাদ