পিএসসিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চেয়ে ১১ দফা দাবি চাকরিপ্রত্যাশীদের, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার (১২ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘পিএসসি সংস্কার আন্দোলন’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।
চাকরিপ্রত্যাশীরা বলেন, গত বছরের জুলাই মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হওয়া গণআন্দোলনের অন্যতম কারণ ছিল সরকারি চাকরিতে মেধাভিত্তিক ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার অভাব। এক বছর পার হয়ে গেলেও এখনো সেই সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধান হয়নি বলেই তারা আবার আন্দোলনে নেমেছেন।
দাবি বাস্তবায়নে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
সংবাদ সম্মেলনে চাকরিপ্রত্যাশীরা সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়ে বলেন, ‘এই সময়ের মধ্যে যদি দাবিগুলোর বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তবে আমরা সর্বাত্মক কর্মসূচিতে যাবো এবং আন্দোলন আরও বিস্তৃত ও তীব্র হবে।’
চাকরিপ্রত্যাশীদের উত্থাপিত ১১ দফা দাবি:
১. ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল সংশোধন করে পুনরায় প্রকাশ করতে হবে, কারণ এতে অসঙ্গতি রয়েছে।
২. ৪৮তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য) পুনঃনির্ধারণ ও চিকিৎসকদের জন্য বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।
৩. ৪৬তম বিসিএস প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং এই বিসিএস বাতিল না করার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৪. ‘নন-ক্যাডার বিধি-২০২৩’ সংশোধন করে মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবাইকে চাকরির ব্যবস্থা দিতে হবে।
৫. ৪৫তম বিসিএস থেকে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০০ করতে হবে এবং লিখিত পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষার সুযোগ চালু করতে হবে।
৬. কমিশনকে নিরপেক্ষ রাখতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
৭. মৌখিক পরীক্ষার আগে অনলাইনে পুনরায় ক্যাডার পছন্দক্রম দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
৮. প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর যথাসময়ে প্রকাশ করতে হবে।
৯. ফৌজদারি বা রাষ্ট্রদ্রোহিতায় দণ্ডিত না হলে গেজেট প্রকাশে কোনো বাধা দেওয়া যাবে না।
১০. পিএসসি সদস্য নিয়োগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
১১. লিখিত খাতার মূল্যায়ন কমিশনে বসেই করতে হবে—নিরপেক্ষতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে।
চাকরিপ্রত্যাশীরা আরও বলেন, ‘আমরা চাকরি চাই—যোগ্যতার ভিত্তিতে, সুশৃঙ্খল ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়। পিএসসি সংস্কার ছাড়া জনগণের আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়।’