রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের পোস্টারিং ও কর্মসূচি, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) ক্যাম্পাসে আইনের তোয়াক্কা না করে পোস্টারিং ও দলীয় কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
শনিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা আয়োজন করে সংগঠনটি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের দেয়াল এবং বিজয়-২৪ হলের ৪০৫ নং কক্ষের দরজায় দলীয় পোস্টার সাঁটানো হয়।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন বলেন, "ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে মিটিং বা সভা করা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের পরিপন্থি। এটি প্রতিষ্ঠানটির শৃঙ্খলা ও নিরপেক্ষ পরিবেশের ওপর সরাসরি আঘাত। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান, ক্যাম্পাসের শান্তিপূর্ণ শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিক।"
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান রায়হান বলেন, "রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রশাসনের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এটি শিক্ষাঙ্গণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। জুলাই পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আমরা আশা করি প্রশাসন সেই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে।"
বিজয়-২৪ হলে পোস্টার লাগানোর বিষয়ে ৪০৫ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, "কারা এখানে পোস্টার লাগিয়েছে আমি জানি না। আমার মনে হয় কেউ ষড়যন্ত্র করে ছাত্রদলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে।"
অন্য এক আবাসিক শিক্ষার্থী সুমিত সরকার বলেন, "আমি রুমের বাইরে আছি। পোস্টার কে লাগিয়েছে আমি জানি না।"
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, "জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস শুধু ছাত্রদলের নয়, এটি সকলের। প্রশাসন কেন এ দিবস পালন করেনি, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আমাদের পক্ষ থেকে হলে পোস্টার লাগানোর কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে, আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।"
আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, "জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি বড় ইস্যু। এটি সব ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের পালন করা উচিত। মুক্তমঞ্চ সকলের মত প্রকাশের স্থান, তাই আমরা সেখানে প্রোগ্রাম করেছি।"
বিজয়-২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান খাঁন জানান, "আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পোস্টার লাগানো শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। যারা এই কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, "ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ। যারা অনুমতি ছাড়া প্রোগ্রাম করেছে, আমরা বিষয়টি দেখব।"
উল্লেখ্য, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রক্টরিয়াল বডির জরুরি নির্দেশনায় রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা নিষিদ্ধ করা হয়।



























