বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

|১৪ আশ্বিন ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ২১ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১২:১৭, ২১ জুলাই ২০২৫

ছিনতাই করতে অস্ত্র-মোটরসাইকেল ভাড়ায় সংঘবদ্ধ চক্র 

ছিনতাই করতে অস্ত্র-মোটরসাইকেল ভাড়ায় সংঘবদ্ধ চক্র 
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে ছিনতাইয়ের জন্য এখন ‘দাদন’ পদ্ধতিতে সরবরাহ করা হচ্ছে অস্ত্র ও মোটরসাইকেল। শুধু তাই নয়, কেউ গ্রেপ্তার হলে জামিনে ছাড়িয়ে আনতেও অগ্রিম টাকা দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজন ছিনতাইকারীর কাছ থেকে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

গত ১১ জুলাই সকালে শ্যামলীর মেরিগোল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পাশে ছিনতাইয়ের শিকার হন শিমিয়ন ত্রিপুরা নামে এক যুবক। তিন ছিনতাইকারী মোটরসাইকেলে এসে চাপাতি ও হাসুয়া দেখিয়ে তার টাকা, মোবাইল, ব্যাকপ্যাক, এমনকি জুতা ও টি-শার্ট পর্যন্ত ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দ্রুত ভাইরাল হয়। পরদিন শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা হলে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের সদস্যরা তদন্ত শুরু করে।

তদন্তে নেমে পুলিশ রাজধানী, কেরানীগঞ্জ ও চরফ্যাশনে অভিযান চালিয়ে আল আমিন (২৮), আসলাম শিকদার (২৯) ও কবির (২২) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও চাপাতি।

আল আমিন ও আসলাম সরাসরি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকলেও কবিরের ভূমিকা ছিল আলাদা। তিনি মাঠপর্যায়ে অংশ না নিয়ে ছিনতাইয়ের অস্ত্র, মোটরসাইকেল ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করতেন।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ছিনতাইকারীরা কবির ও তার ভাই জহিরের কাছ থেকে ভাড়া নেন এসব অস্ত্র ও যানবাহন। এই দুই ভাই নিজেরা ছিনতাই না করলেও রাজধানীর একাধিক ছিনতাই চক্র পরিচালনা করেন। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় চাপাতি ও মোটরসাইকেল দিয়ে ছিনতাই করিয়ে মালামাল নিজেরাই কিনে নেন।

এই প্রক্রিয়ায় ছিনতাইকারীদের অগ্রিম টাকা দিতে হয় না। ছিনতাই শেষে মালামাল বিক্রি করে তারা ভাড়া পরিশোধ করে। মালামাল বিক্রির ক্ষেত্রেও চক্রের বাইরে কোনো সুযোগ নেই। জহির-কবির সিন্ডিকেট ছাড়া অন্য কোথাও বিক্রি নিষিদ্ধ। এমনকি কেউ গ্রেপ্তার হলে জামিনের টাকা পর্যন্ত ‘দাদন’ হিসেবে কবির জোগান দেন।

কবিরের দায়িত্ব অস্ত্র ও টাকা সরবরাহ করা এবং প্রয়োজনমতো অগ্রিম বণ্টন করা। জহির ঠিক করেন ছিনতাইয়ের স্থান, কী পরিমাণ অস্ত্র লাগবে এবং কয়টি মোটরসাইকেল ব্যবহার হবে। পরে ছিনতাইকৃত মাল তার কাছেই বাধ্যতামূলকভাবে বিক্রি করতে হয়।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমন ‘দাদন’ভিত্তিক ছিনতাই চক্র এবারই প্রথম চিহ্নিত হলো, যারা সংগঠিত পদ্ধতিতে ছিনতাই পরিচালনা করে। এই চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে বহু মামলা রয়েছে। বারবার জামিনে মুক্ত হয়ে তারা একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রাকিব খান বলেন, এ চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীতে জাকির-রুবেলসহ তিনটি বড় চক্র এই কায়দায় ছিনতাই চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক তথ্য উদঘাটিত হয়েছে এবং শিগগিরই চক্রের বাকি সদস্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

সূত্র: মানবজমিন
 

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ