শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

|৭ কার্তিক ১৪৩২

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ১৫:৩৬, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১৫:৪১, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

হাসিনার বিচার না হলে জুলাই শহীদদের সঙ্গে অবিচার করা হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

হাসিনার বিচার না হলে জুলাই শহীদদের সঙ্গে অবিচার করা হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
ছবি: সংগৃহীত

গণহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনাসহ আসামিদের সুষ্ঠু বিচার না হলে জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের প্রতি ইতিহাসই অন্যায় করবে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা সংক্রান্ত প্রসিকিউশনের সর্বশেষ যুক্তিতর্ক তুলে ধরার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রসিকিউশনের পক্ষে আদালতে দাখিল করা বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, 'আমি বিশ্বাস করেছিলাম, শেখ হাসিনা ন্যায়বিচারের মুখোমুখি হবেন। কারণ তিনি অন্যের উদ্দেশে বলেছিলেন, সাহস থাকলে বিচারের মুখোমুখি হন। কিন্তু তিনি এই কথা মন থেকে বলেননি। বললে আজ দেশের মাটিতে এসে বিচারের মুখোমুখি হতেন।'

আসাদুজ্জামান আরও সতর্ক করেছেন যে, যদি এসব আসামির দণ্ড নিশ্চিত করা না যায় তবে তা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অগণিত মানুষের জীবন বিপন্ন করে তুলবে। তাঁর কথায়, ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করলে দেশের মানুষ ইতিহাসের সামনে ভূমিকায় ভীরু ও কাপুরুষ হয়ে অবমুক্ত থাকবে। তিনি মামলার আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।

এর আগে বক্তব্যের পর ট্রাইব্যুনাল থেকে বলা হয়, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। আদালত পর্যবেক্ষণ করে যে, মামলার উভয় পক্ষই ন্যায়বিচারের প্রয়াসে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তাদেরই উদ্দেশ্য হচ্ছে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। প্রসিকিউশন বর্তমানে তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ দিন ধরে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছে; এরপর ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য একটি তারিখ ধার্য করবেন বলে জানানো হয়েছে।

মামলা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, দীর্ঘ শুনানিতে উপস্থাপিত সাক্ষ্য ও প্রমাণাদি থেকে উঠে এসেছে — জুলাই আন্দোলনের সময় গণহত্যা, নৃশংসতা, গুম-খুন এবং নির্যাতনসহ বিভিন্ন ঘটনার বিস্তৃত চিত্র। মামলায় অভিযোগপত্রে উল্লেখিত অনেক কেসে শহীদ পরিবার, আহত ও চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তাদের হয়ে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন কলের সময়ের পুলিশ আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও। আইজিপি তাঁর স্বাক্ষ্যে গণহত্যার পেছনের প্রেক্ষাপট ও নির্দেশদাতাদের নাম উল্লেখ করেন বলে আদালতে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রসিকিউশন বলেছেন, 'এতদূর পর্যন্ত যতসব স্বাক্ষ্য ও প্রমাণ তারা উপস্থাপন করেছেন তা কোনো বিশ্বমানের আদালতেই যথেষ্ট হবে এবং এই প্রমাণাদি আসামিদের অপরাধ প্রমাণে পর্যাপ্ত। আদালত ওই প্রমাণাদি খতিয়ে দেখে আদালতীয় সিদ্ধান্ত দেবেন বলেও জানানো হয়।'

আদালতের পরবর্তী কার্যক্রমে প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক শেষ হওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল রায়ের দিন ধার্য করবেন। মামলাটি দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাস ও বিচারব্যবস্থার জন্য গুরুতর তাৎপর্য বহন করছে, এমনটাই আদালত ও প্রসিকিউশনের বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান।

সদ্য সংবাদ/এমটি