বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

|১৫ আশ্বিন ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১০ জুলাই ২০২৫

শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে বিষক্রিয়ায় ৪ তরুণের মৃত্যু

শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে বিষক্রিয়ায় ৪ তরুণের মৃত্যু
ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যাওয়া মোবাইল ফোন তুলতে গিয়ে বিষক্রিয়ায় চার তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আরও একজনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে উপজেলার হরিণছড়া চা বাগানে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- রানা নায়ক (১৭), শ্রাবণ নায়েক (১৯), কৃষ্ণ রবিদাস (২০) ও নিপেন ফুলমালি (২৭)। তাঁরা সবাই চা শ্রমিক পরিবারের সন্তান।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রণয় কান্তি দাশ জানান, একজনের মোবাইল সেপটিক ট্যাংকে পড়ে গেলে তা উদ্ধারে একে একে চারজন ট্যাংকে নামেন। বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে তাঁরা সবাই মারা যান।

কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সব্যসাচী পাল তমাল জানান, বুধবার রাত পৌনে ১টার দিকে হাসপাতালে একে একে চারটি মরদেহ আসে। প্রায় এক ঘণ্টা পর গুরুতর আহত অবস্থায় আরেকজনকে আনা হয়। তিনি বলেন, ‘এক রিঙের একটি সেপটিক ট্যাংকে এত টক্সিক গ্যাস কীভাবে জমা হয়েছিল, সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ জানান, এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও ব্যতিক্রমধর্মী এক দুর্ঘটনা। তিনি বলেন, ‘মোবাইলটি তুলতে গিয়ে প্রথমে একজন নামেন, পরে পর্যায়ক্রমে তিনজন আর নামলে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন।’

তিনি আরও জানান, চতুর্থ তরুণদের উদ্ধার করতে গিয়ে রবি বুনার্জী নামের একজন সেপটিক ট্যাংকে নামেন এবং তিনিও বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন। পরে জাস্টিন নামে আরেক তরুণ এসে দ্রুত তাঁকে উপরে তুলে আনেন। তবে বাকি চারজনকে আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। জাস্টিনও পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে হরিণছড়া চা বাগানে। স্থানীয়রা দুর্ঘটনার জন্য নিরাপত্তা অব্যবস্থাপনা ও সচেতনতাহীনতাকেই দায়ী করছেন। এখন অপেক্ষা ময়নাতদন্ত ও তদন্ত রিপোর্টের, যা থেকে প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে বলে আশা করা হচ্ছে।