রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

|৩০ কার্তিক ১৪৩২

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৩০, ২ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১৮:৩০, ২ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রামে বৃষ্টির মধ্য দেবীদুর্গাকে বিসর্জন

চট্টগ্রামে বৃষ্টির মধ্য দেবীদুর্গাকে বিসর্জন
ছবি: সংগৃহীত

আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী থেকে শুরু হওয়া দুর্গোৎসব বিজয়া দশমীর দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। সকালে বিহিত পূজা, পুষ্পাঞ্জলি ও শান্তির জল ছিটানোর পর দেবী দুর্গাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, নবমী পূজার পর দেবী মর্ত্যলোক ছেড়ে কৈলাসে ফিরে যান। তাই দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্ত হয়। এরপর ভক্তরা নগরীর বিভিন্ন মণ্ডপে দেবীকে সিঁদুর, তেল ও পান-চিনি নিবেদন করে অশ্রুসজল নয়নে বিদায় জানান। বিসর্জনের মাধ্যমে তারা আগামী বছরের অপেক্ষায় থাকেন।

চট্টগ্রাম নগরে এবারও প্রধান বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট, অভয়মিত্র ঘাট, পারকি সৈকত এবং স্থানীয় পুকুরেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। দুপুরে ট্রাকে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় পতেঙ্গায়। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও বিসর্জন দেখতে হাজির হন হাজারো মানুষ, যেখানে অন্যান্য ধর্মের মানুষও উপস্থিত ছিলেন। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বিসর্জন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

বিসর্জন কার্যক্রমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব, পুলিশ ও সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। বিকেলে পতেঙ্গায় গিয়ে কার্যক্রম পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। তিনি জানান, ‘‘বিসর্জন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সমাপ্তির নির্দেশ থাকলেও প্রয়োজনে রাত পর্যন্ত নিরাপত্তা থাকবে।’’

এ বছর চট্টগ্রামে ১৮৭৭টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিখিল কুমার নাথ জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে পতেঙ্গায় বিসর্জন শুরু হয়। স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিমা বিসর্জনে সহায়তা করেন। নগরীর ২৯২টি পূজামণ্ডপের মধ্যে শতাধিক প্রতিমার বিসর্জন হয়েছে পতেঙ্গায়। জেলার ১৬ উপজেলায় আরও ১,৫৮৫টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শাস্ত্রমতে, এ বছর দেবী দুর্গা কৈলাস থেকে গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যে এসেছিলেন এবং ফেরার সময় দোলায় (পালকি) করে যাত্রা করছেন। বিশ্বাস অনুযায়ী, গজে আগমন শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল বয়ে আনে, আর দোলায় গমন মহামারি বা বড় কোনো বিপর্যয়ের আশঙ্কার ইঙ্গিত বহন করে। মহালয়ার দিন ২১ সেপ্টেম্বর থেকে দেবীপক্ষের সূচনা হয়, এবং আগামী ৬ অক্টোবর কোজাগরী পূর্ণিমার মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটবে।

সর্বশেষ