‘বাবার নির্দেশ’ ছোট ভাইয়ের দু’চোখ উপরে ফেললো বড় দুইভাই

বরিশালের মুলাদী উপজেলার সাহেবেরচর গ্রামে পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও টাকার লোভের জেরে ছোট ভাইয়ের দুই চোখ উপড়ে বাবার হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনাটি গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সংঘটিত হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভিডিওটি মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। চোখ হারানো ব্যক্তির নাম সিরাজুল ইসলাম ওরফে রিপন বেপারী (৫০), তিনি গ্রামের আরশেদ বেপারীর ছোট ছেলে।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন দুই ভাই রোকন বেপারী ও স্বপন বেপারী। তাদের সঙ্গে রোকনের স্ত্রী নুর নাহার বেগম এবং মেয়ে সুবর্না আক্তারের নামও মামলায় উল্লেখ রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বাবা আরশেদ বেপারী। ঢাকায় থেকে রিপন বিপুল পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণ জমা করেছিলেন, যা তিনি পরে ভাই রোকনের কাছে রাখতেন। সম্প্রতি তা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সালিস বৈঠকেও সমাধান হয়নি।
রিপনের বড় ভাই খোকন বেপারী জানান, ঘটনার রাতে বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলেদের নির্দেশ দেন রিপনের চোখ তুলে নিতে। এরপরই রিপনের চোখ উপড়ে নেওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় রিপন প্রথমে গৌরনদীর আশুকাঠি হাসপাতালে ভর্তি হন এবং পরে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাধ্যমে ঢাকার আগারগাঁও চক্ষু ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা চলেছে।
প্রতিবেশী এনামুল হক বলেন, ‘টাকার জন্য ভাইদের এভাবে ক্ষতি করা ভাবতেই পারিনি। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, বাবা নিজেই এই নির্দেশ দিয়েছেন।’ রিপনের ছেলে আব্দুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘চাচাদের কাছে রাখা ৩৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণ ফেরত চাওয়াতেই বাবা এই নির্মম কাজ করেছেন। বাবার চোখ হারালেও, আমাদের ভবিষ্যৎও অন্ধকারে।’
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, রিপনের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় চুরি ও ছিনতাইসহ অন্তত আটটি মামলা এবং মুলাদী থানায় হত্যাসহ ২০টির বেশি মামলা রয়েছে। চোখ উৎপাটনের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আদালতের আদেশ পৌঁছানোর পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।