শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

|৩০ কার্তিক ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:৪৪, ১২ নভেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৪:৪৪, ১২ নভেম্বর ২০২৫

আন্ডারওয়ার্ল্ডের দখলযুদ্ধে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন খুন, পাঁচজন গ্রেফতার

আন্ডারওয়ার্ল্ডের দখলযুদ্ধে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন খুন, পাঁচজন গ্রেফতার
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পুরান ঢাকায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুন (৫৫) হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুজন পেশাদার শুটার ফারুক ওরফে কুত্তা ফারুক ও রবিন। বাকি তিনজন হলেন ইউসুফ, রুবেল ও শামীম।

গত সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মামুনকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেলে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

ডিবির তথ্যানুসারে, মামুন হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ডের আলোচিত জুটি ইমন-মামুনের পুরোনো দ্বন্দ্ব। ইমনের হয়ে কাজ করা রনি নামের এক ব্যক্তি হত্যার মূল পরিকল্পনা করেন। তিনি পেশাদার শুটার ফারুক ও রবিনকে ভাড়া করেন এবং তাদের হাতে দেন দুই লাখ টাকা ও দুটি পিস্তল। উদ্দেশ্য ছিল পুরান ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে একক প্রভাব প্রতিষ্ঠা করা। রনি বর্তমানে পলাতক।

ঘটনার পর ডিবি পুলিশের একাধিক দল সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সিলেট, নরসিংদী ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। নরসিংদীর ভেলানগর এলাকা থেকে গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগাজিন, নগদ এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা এবং হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

তদন্তে জানা গেছে, হত্যার পর রবিন ও ফারুক রনির নির্দেশে অস্ত্রগুলো রেন্ট-এ-কার চালক রুবেলের কাছে জমা রাখে। পরে রুবেল অস্ত্রগুলো মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকার ইউসুফ নামের এক দর্জির বাসায় লুকিয়ে রাখে। সেখানে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে ডিবি।

ডিবি কর্মকর্তারা জানান, হত্যার পর অভিযুক্তরা প্রথমে সিলেটে পালিয়ে যায় এবং সেখান থেকে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করে। কিন্তু সীমান্ত অতিক্রমে ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরার পথে ফেরার সময় তারা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, 'এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বেরই ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই শীর্ষ সন্ত্রাসী, যারা রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ডে প্রভাব বিস্তারে লিপ্ত ছিল। মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।'

সদ্য সংবাদ/এমটি