বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

|১৪ আশ্বিন ১৪৩২

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ২১:১০, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলায় শিক্ষার্থীরা অপমানিত বোধ করেছিলেন: নাহিদ

‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলায় শিক্ষার্থীরা অপমানিত বোধ করেছিলেন: নাহিদ
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আখ্যায়িত করায় সারা দেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানিত বোধ করেছিলেন।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ মামলায় অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম তার আংশিক জবানবন্দিতে বলেন, গত বছরের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা ও নাতিপুতি বলে অভিহিত করে কোটাপ্রথার পক্ষে অবস্থান নেন। এই বক্তব্যই আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণের বৈধতা হিসেবে কাজ করে। অতীতেও সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ন্যায্য আন্দোলন হলে একইভাবে আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা আখ্যা দিয়ে তাদের ন্যায্য দাবি খর্ব করা হতো।

তিনি আরও জানান, ওই বক্তব্যের পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। পরদিন ১৭ জুলাই রাতে তারা দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যার প্রেক্ষিতে ১৮ জুলাই সর্বস্তরের মানুষ রাজপথে নেমে আসে। বিশেষত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে আন্দোলনের নেতারা হুমকির মুখে পড়ে আত্মগোপনে চলে যান।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ১৭ জুলাই ডিজিএফআই আন্দোলন প্রত্যাহার ও সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসতে চাপ দেয়। একই সময় শাহবাগ থানাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা দেওয়া হয়। তবু আন্দোলন চালু থাকে।

তার ভাষ্য অনুযায়ী, আন্দোলনের সময় সারা দেশে বহু মানুষ আহত ও নিহত হন। ১৭ জুলাই রাতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়, আর ১৯ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে গুলি চালালে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ে।

তিনি বলেন, ওই সময় তারা উপলব্ধি করেন সরকার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলেছে। আন্দোলন, হতাহত কিংবা বাস্তব চিত্রের কোনো খবরই প্রচার করা হচ্ছিল না।

আগামীকাল (১৮ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালে নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।
 

সর্বশেষ