প্রলেপ দেওয়া পরিবর্তন নয়, চাই গভীর থেকে রূপান্তর: প্রধান উপদেষ্টা

নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়ে দেশের কাঠামোগত ও মানসিক সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “প্রলেপ দেওয়া পরিবর্তন নয়, চাই গভীর থেকে রূপান্তর। না হলে এক স্বৈরাচার যাবে, আরেক স্বৈরাচার আসবে।”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণ অনুষ্ঠান’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাইয়ের শহীদদের স্মরণে আবেগতাড়িত হয়ে ড. ইউনূস বলেন, “প্রতিবার যখন ভিডিও দেখি, নিথর হয়ে যাই। শহীদদের বাবা-মায়েরা তো সারাক্ষণই নিথর হয়ে আছেন। গোপন নির্যাতন কক্ষ ‘আয়নাঘর’-এর কথা মানুষ জানে না। দেখলে বুঝতো, কী ভয়াবহ ছিল সময়টা।”
তিনি বলেন, “আমাদের জাতিগতভাবে নিজের ভেতরে পরিবর্তন আনতে হবে। শুধুমাত্র আইন বদলিয়ে লাভ নেই, যদি মনের ভিতরের সংস্কার না হয়।”
রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “১৫-১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমরা ভয়াবহ সময় পার করেছি। এখন দরকার জনগণের প্রতিনিধিত্বসম্পন্ন সরকার।”
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “৫ আগস্টের আগে যে নিপীড়ন চালানো হয়েছে, তা জাতির ইতিহাসে কলঙ্ক। আয়নাঘরে রাখা মানুষদের কথা জাতিসংঘের প্রতিবেদন আংশিক বলেছে। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে হতে হবে। শুধু নির্বাচন হলে ডিজাস্টার হবে।”
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “গুম, খুন, নির্যাতনের মধ্য দিয়ে মানুষ জীবন অতিবাহিত করেছে। সেই সময়ের অপরাধীদের বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
নির্যাতিত পরিবারের ক্ষোভ
অনুষ্ঠানে শহীদ নাফিসের বাবা গোলাম রহমান বলেন, “আমার ছেলে হত্যায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাকে এখনও সেবা অবস্থায় রাখা হয়েছে। তার বিচার চাই।”
শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতের বোন সাবরীনা আফরোজ বলেন, “শত শত শহীদের মরদেহ অজ্ঞাত হিসেবে দাফন হয়েছে। তারা শেষবারের মতো পরিবারের মুখটাও দেখতে পারেনি। এক বছরে তাদের জন্য সরকার কী করেছে?”