বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫

|২১ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৪২, ২৪ জুলাই ২০২৫

ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানোর আদেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানোর আদেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা
ছবি: ইন্টারনেট

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক গোপন ফোনালাপ ফাঁস করে দাবি করেছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের সরাসরি আদেশ’ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, “যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানে গুলি চালাও।”

আল জাজিরা জানায়, জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি) থেকে গত ১৮ জুলাই এসব ফোনালাপ রেকর্ড করা হয়। এতে দেখা যায়, শেখ হাসিনা তার ঘনিষ্ঠ এক সহযোগী এবং পরে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে ওই নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, হেলিকপ্টার থেকে জমায়েত লক্ষ্য করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত ও ২০ হাজারের বেশি আহত হয় বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT) জানিয়েছে। ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারত চলে যান।

আন্দোলনের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ সরকার অস্বীকার করলেও পপুলার মেডিকেলের চিকিৎসক ডা. শাবির শরীফ আল জাজিরাকে বলেন, “হেলিকপ্টার থেকে হাসপাতালের প্রবেশপথ লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছিল। এক্স-রেতে বড় গুলির ক্ষত দেখা গেছে।”

আল জাজিরা জানায়, ফোনালাপগুলো ফরেনসিকভাবে পরীক্ষা করে কোনো ভুয়া সম্পাদনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “হাসিনা নিজেই বলেছিলেন—‘জানি রেকর্ড হচ্ছে, তাতে সমস্যা নেই।’ তিনি আজ নিজেই তার খোঁড়া গর্তে পড়েছেন।”

গত বছর ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ছাত্র আন্দোলনকারী আবু সাঈদ। এরপর আন্দোলন আরও বিস্তৃত হয়। রংপুর মেডিকেলের চিকিৎসক জানান, পুলিশ মেডিকেল রিপোর্ট বদলানোর জন্য পাঁচবার চাপ দেয়। অথচ আবু সাঈদের মৃত্যুর কারণ ছিল গুলি।

আবু সাঈদের পরিবারসহ শহীদদের ৪০টি পরিবারকে পরে গণভবনে ডেকে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করানো হয়। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাদের জোর করে নেওয়া হয়েছিল এবং ভুল বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করা হয়।

আওয়ামী লীগ এক বিবৃতিতে বলেছে, ফোনালাপ ভুয়া বা সম্পাদিত। শেখ হাসিনা কখনো গুলি চালানোর নির্দেশ দেননি।

সম্পর্কিত বিষয়: